সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেছেন ঠিকই। কিন্তু স্বামীর থেকে কোনও রকম খোরপোশই নিতে চাননি। উল্টে বিয়ের সময় শ্বশুরবাড়ির পরিবার যে সোনার গয়না দিয়েছিল, তা-ও ফিরিয়ে দিলেন স্ত্রী। তাঁর এই আচরণে বিস্মিত সুপ্রিম কোর্ট। একে ‘বিরল সমঝোতা’ বলেও মন্তব্য করেন শীর্ষ আদালতের বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালা এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ।
বৃহস্পতিবার মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে ওঠে। মহিলার আইনজীবী আদালতে জানান, তাঁর মক্কেল স্বামীর কাছ থেকে কোনও রকম খোরপোশ দাবি করেননি। তবে কিছু সোনার চুড়ি হস্তান্তর হওয়া বাকি আছে এখনও। এতে বিচারপতিদের মনে হয়েছিল, মহিলাই তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেদের কাছ থেকে স্ত্রীধন ফেরত চেয়েছেন। এর পরেই মহিলার আইনজীবী সঙ্গে সঙ্গে বিচারপতিদের জানান, শ্বশুরবাড়ির কিছু ফেরানোর নেই। বরং তাঁর মক্কেলই কিছু সোনার গয়না ফিরিয়ে দেবেন শ্বশুরবাড়িকে। যে সোনার গয়না বিয়ের সময় শ্বাশুড়ি তাঁকে দিয়েছিলেন। এতেই অভিভূত হন বিচারপতিরা।
মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলে, “কোনও খোরপোশই দাবি করা হল না। এটা একটা বিরল সমঝোতা। এই আচরণ আজকাল দেখা যায় না।” ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এ দিনের শুনানিতে ছিলেন মহিলা। তাঁর উদ্দেশে বিচারপতি পার্দিওয়ালা বলেন, “আপনার এই আচরণকে আমরা স্বাগত জানাই। অতীত ভুলে যান। নতুন করে জীবন শুরু করুন।”
প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগেই একটি বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় দিল্লি হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, স্বনির্ভর এবং আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল স্ত্রী খোরপোশ দাবি করতে পারেন না। সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্যই স্থায়ী খোরপোশের ব্যবস্থা করা হয়। দু’জনের মধ্যে আর্থিক সমতা এবং সমৃদ্ধির জন্য এটিকে ব্যবহার করা যায় না। সাম্প্রতিককালে সুপ্রিম কোর্টও খোরপোশ সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলায় কড়া মন্তব্য করেছে। বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালাই সম্প্রতি এক মহিলার ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। বিয়ের এক বছর কাটতে না কাটতেই বিচ্ছেদের আর্জি জানিয়েছিলেন ওই মহিলা। খোরপোশ বাবদ স্বামীর থেকে পাঁচ কোটি টাকাও দাবি করেন তিনি। মহিলার এমন দাবি শুনেই ধমক দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত স্পষ্ট করে দেয়, পাঁচ কোটি টাকা খোরপোশের দাবি অযৌক্তিক। মামলাকারী দু’পক্ষকেই সুপ্রিম কোর্টের মধ্যস্থতা কেন্দ্র (মিডিয়েশন সেন্টার)-এ গিয়ে বিষয়টির নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেয়।