• নির্বাচনি সংস্কার নিয়ে তোপ তৃণমূলের, দোলার বক্তব্য বাদ দেওয়ার হুঁশিয়ারি
    বর্তমান | ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: নির্বাচনি সংস্কার নিয়ে আলোচনায় বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় তুমুল বিতণ্ডায় জড়াল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি। ১০০ দিনের কাজে বকেয়া থেকে ভিন রাজ্যে বাংলাভাষিদের হেনস্তা, ২০০২ সালের ভোটার তালিকা থেকে অনুপ্রবেশের মতো ইস্যু— আলোচনায় অংশ নিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন এপ্রসঙ্গ তুলতেই প্রবল হইচই শুরু করল বিজেপি। রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ জানিয়ে দেন, ‘আপনি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর বলুন। বিষয়ের বাইরে যা বলবেন, সেটিই সভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়া হবে। বিষয়ের উপর না বললে আমি পরবর্তী বক্তার নাম ঘোষণা করতে বাধ্য হব।’ লাগাতার এই ‘সতর্কতা’ সত্ত্বেও নাটকীয়ভাবে একটানা ভাষণ দিয়ে গেলেন দোলা। এদিন পুরো ভাষণই তিনি দিয়েছেন বাংলায়। যদিও এরপর পয়েন্ট অব অর্ডার তোলেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। ২৪০ নং ধারার উল্লেখ করে সুখেন্দুবাবু আর্জি জানান, ‘বিষয়ের বাইরে হওয়ার কারণে দোলাদেবীর বক্তব্য যদি রাজ্যসভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়া হয়, তাহলে একইভাবে পূর্ববর্তী বক্তা বিজেপি সাংসদ সুধাংশু ত্রিবেদীর ভাষণের অংশবিশেষও বাদ দেওয়া হোক।’ সেই আর্জি মঞ্জুর করে ডেপুটি চেয়ারম্যান জানিয়ে দেন, ইতিমধ্যেই তিনি সেই নির্দেশ দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, বিহার প্রসঙ্গে বাংলার সীমানাবর্তী জেলা নিয়ে নির্বাচনি সংস্কার সংক্রান্ত আলোচনায় মন্তব্য করেছিলেন সুধাংশু। যদিও বৃহস্পতিবার রাজ্যসভার জিরো আওয়ারে বাংলা ও বাংলাভাষি বিতর্কের প্রসঙ্গ তোলেন তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষ। তিনি বলেন, ‘বিশেষত দিল্লি, গুরুগ্রামের মতো শহরে ক্রমাগত বাংলাভাষিদের হেনস্তা করা হচ্ছে। তাঁরা এদেশের নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে দু’জনকে।’ সাগরিকার অভিযোগ, রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েই একাজ করছে বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যের সরকার। এর তীব্র প্রতিবাদ জানাতে থাকেন বিজেপি সাংসদরা। ফলে এদিন রাজ্যসভার জিরো আওয়ারেও বিজেপির সঙ্গে তুলকালাম হয় তৃণমূলের। 

    উল্লেখ্য, লোকসভার পর বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় শুরু হয়েছে নির্বাচনি সংস্কার নিয়ে আলোচনা। আলোচনা শুরু করেন কংগ্রেস সাংসদ অজয় মাকেন। পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি দাবি করেন, কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর বিগত ১১ বছরে বিজেপির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের অর্থ ফুলে ফেঁপে উঠেছে। মাকেন বলেন, ‘২০২৪ সালের ১৬ মার্চ লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়েছিল। তার এক মাস আগে কংগ্রেসের সমস্ত অ্যাকাউন্ট আচমকাই ফ্রিজ করে দেওয়া হয়। এভাবে গণতন্ত্র চলতে পারে? আম্পায়ার যদি নিজেই অন্য দলের জার্সি পরে ফেলেন, তাহলে অপর দলের খেলোয়াড়রা কী করবেন? কিছুই যদি লুকনোর না থাকে, তাহলে অযথা এত ভয় কেন পাচ্ছে বিজেপি সরকার?’
  • Link to this news (বর্তমান)