• পঞ্চায়েতের বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদন নিয়ে সুয়োমোটো তদন্তের সিদ্ধান্ত
    বর্তমান | ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রহড়ার পাতুলিয়ায় আকাশচুম্বি আবাসনের অনুমোদন দিয়েছিল পঞ্চায়েত। তা প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসল পুলিশ ও প্রশাসন। ইতিমধ্যে বহুতল আবাসনের প্রোমোটারদের নোটিশ দেওয়া শুরু করেছে পুলিশ। ১০ জন প্রোমোটারের কাছে নোটিশ যাচ্ছে। আবাসন তৈরির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফেও সুয়োমোটো তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

    গ্রামীণ এলাকায় বহুতল নির্মাণের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। কত তলা পর্যন্ত বাড়ি বা আবাসনের অনুমোদন গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ দেবে তাঁর নির্দিষ্ট মাপকাঠিও রয়েছে। কিন্তু ওই নিয়ম না মেনে গত কয়েক বছরে পাতুলিয়া ৬-৭তলা বহু আবাসনের বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমোদন দিয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত। ওইসব আবাসনে প্রচুর মানুষও থাকছেন। কিছু আবাসন নির্মীয়মাণ। ওই সব আবাসন তৈরিতেও বহু অনিয়ম রয়েছে বলে অভিযোগ। আদৌ সুরক্ষাবিধি মেনে এইসব আবাসন তৈরি হয়েছে কি না, তা নিয়েও খোদ আবাসিকদের মধ্যে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আগামী দিনে কোনও বিপর্যয় হলে দায় কার, তা নিয়েও কাটাছেড়া শুরু হয়েছে। 

    বিতর্ক শুরু হতেই রহড়া থানার তরফে প্রোমোটারদের নোটিশ করা হচ্ছে। ওইসব আবাসনের সমস্ত কাগজপত্র থানায় জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু পুলিশ নয়, প্রশাসনের তরফেও সুয়োমোটো তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আবাসনের বিল্ডিং প্ল্যান সংক্রান্ত সমস্ত কাগজ পঞ্চায়েতের থেকে চাওয়া হবে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, বহুদিন ধরে এনিয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ আসছিল। একশ্রেণির নির্মাণ সহায়কও এই অনিয়মে যুক্ত হচ্ছেন। এতে রাজ্য সরকার বিপুল রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পাতুলিয়ার ঘটনায় সুয়োমোটো তদন্ত করে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কোনও বেনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। 

    অন্যদিকে, গত সপ্তাহে পাতুলিয়া পঞ্চায়েতের রুইয়া পূর্বপাড়া এলাকা কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে লাগোয়া সরকারি পুকুর ভরাটের অভিযোগ উঠেছিল। রহড়া থানায় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তপতি দাসের ছেলে অতনু দাস ওরফে ছোটন দাসের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। তিনদিনের মধ্যে ওই পুকুর থেকে মাটি তুলে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছিল প্রশাসন। পুলিশ তদন্তে নেমে একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে। ট্রাফিক পুলিশের সিসি ক্যামেরায় অতনু দাসের উপস্থিতিও দেখা গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তা ইতিমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। এবিষয়ে অতনুবাবু বলেন, চক্রান্ত করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হয়েছে। আমি আদালতে বেল নিয়েছি। সিসি ক্যামেরায় তাঁর উপস্থিতির প্রশ্নে বলেন, তেমন কিছু থাকলে পুলিশ আদালতে জমা দেবে। আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে হওয়া সমস্ত চক্রান্ত ফাঁস করে দেব। 
  • Link to this news (বর্তমান)