নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: কোনও একক ব্যক্তি নন, গোটা একটি সংস্থা এবার পড়ল প্রতারকদের খপ্পরে। একটি বেসরকারি হাসপাতালের ৯৪ লক্ষ টাকা গায়েব করে দিল জালিয়াতরা। পুলিশের বক্তব্য, বেশ কয়েকমাস ধরে এই ধরনের প্রতারণার ঘটনার কথা সামনে আসছে।
জানা গিয়েছে, বেসরকারি হাসপাতালটির ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) (ফিনান্স) এর কাছে ৯ ডিসেম্বর একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ আসে। মেসেজের কন্ট্যাক্টে ওই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টরের (এমডি) ছবি রয়েছে। ভিপি’কে মেসেজে এমডি জানান, পুরনো নম্বরটি তিনি ব্যবহার করছেন না। তার বদলে ব্যবহার করছেন এই নতুন নম্বর। ঠিক পরের দিন অর্থাৎ ১০ ডিসেম্বর ওই নম্বর থেকে ৯৪ লক্ষ টাকা ট্রান্সফার করার নির্দেশ আসে ভিপি’র কাছে। সঙ্গে একটি অ্যাকাউন্ট নম্বরও দেওয়া হয়। প্রোফাইল পিকচারে এমডি’র ছবি থাকায় কোনও সন্দেহ জাগেনি ভিপি’র মনে। তারপর খোদ এমডি’র নির্দেশ ভেবে তা পালন করেন। টাকা ট্রান্সফার করে দেন। তবে পরে কোনও কারণে সন্দেহ হওয়ায় ভিপি বুঝতে পারেন এমডি পরিচয়ে প্রতারকরা হাতিয়ে নিয়েছে ৯৪ লক্ষ টাকা। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাগুইআটি থানায় অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কয়েকমাস ধরে বিভিন্ন জায়গায় এমন ঘটনা ঘটছে ঘটছে। হোয়াটসঅ্যাপ এবং ই মেল করে প্রতারণা করছে। ই মেলের কোনও একটি ওয়ার্ড বা নম্বর বদলে একই রকম দেখতে মেল আই ডি তৈরি করছে প্রতারকরা। যে ব্যবসায়ীরা ই মেল মারফত ব্যবসা করেন তাঁদেরই মূলত টার্গেট করে।
১০ ডিসেম্বর ফান্ড ট্রান্সফারের হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাওয়ার পর ভিপি সেই অ্যাকাউন্ট নম্বরে কোম্পানির অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পাঠিয়েছিলেন। তবে প্রতারণার বিষয়টি বোঝার পর যে অ্যাকাউন্টে ৯৪ লক্ষ টাকা ট্রান্সফার করেছিলেন সেই ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার কথাও বলা হয়। ততক্ষণে অবশ্য অনেক পরিমাণ টাকা সরিয়ে ফেলেছিল প্রতারকরা। এরপর দ্রুত সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালে ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়। এবং ১০ ডিসেম্বরই বাগুইআটি থানায় অভিযোগ।
পুলিশ ও সাইবার বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, হোয়াটসঅ্যাপ বা ই-মেলের মাধ্যমে যে কেউ সংস্থার পদস্থ ব্যক্তি বলে পরিচয় দিতেই পারে। কিন্তু ফান্ড ট্রান্সফারের আগে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত হতে হবে প্রেরককে। প্রয়োজনে আগের নম্বরে ফোন করে কথা বলা দরকার। বা ভিডিও কল করার দরকার। শুধুমাত্র মেসেজের উপর ভরসা করা চলবে না। তা করলেই বিপদ। দ্বিতীয়ত এই ধরনের প্রতারণায় প্রতারকরা নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর দেয়। ফলে নতুন অ্যাকাউন্ট নম্বর দেখলেই অতিরিক্ত সতর্কতা দেখাতে হবে সবাইকে।