বাদ যাওয়া ৫৮ লক্ষের বুথওয়াড়ি তালিকা টাঙানো শুরু ভোটকেন্দ্রে
বর্তমান | ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে ইনিউমারেশন পর্ব। আর এদিন থেকেই শুরু হয়ে গেল বুথে বুথে বাদ পড়া ভোটারদের তালিকা টাঙানোর কাজ। আগামী ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত হবে খসড়া ভোটার তালিকা। কিন্তু তার আগেই রাজ্যের সমস্ত বুথ, অর্থাৎ ভোটকেন্দ্রে টানানো থাকবে বাদ পড়া ভোটারদের তালিকা। অর্থাৎ, নোটিশ পাওয়ার আগে পর্যন্ত যাঁদের নাম বাদ যাওয়া নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। সেইসঙ্গে এদিন ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকা যে সব ভোটার ইনিউমারেশন ফর্ম পূরণের পর সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন, তাঁদের নথি এখনই বিএলওদের আপলোডের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকা সন্দেহজনক ভোটারদের নথি আপলোডের জন্য এদিন বিএলও অ্যাপে ‘রিভেরিফাই লজিকাল ডিসক্রিপেন্সি’ নামে একটি নতুন ট্যাব যুক্ত করা হয়েছে। এবং সেই ট্যাব মারফত সংশ্লিষ্ট বুথের সন্দেহজনক ভোটারদের তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছে কমিশন। বিএলওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ফর্মে বাবা, মা, ঠাকুরদা ঠাকুরমা কিংবা দাদু-দিদিমাকে আত্মীয় দেখানো বহু ভোটারকে নিয়ে সন্দেহ রয়েছে কমিশনের। তাই তাঁদের থেকে ফর্মে দেখানো ‘আত্মীয়’ সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট নথি জোগাড় করে তা আপলোড করতে হবে। যেখানে ভোটারের সঙ্গে ওই আত্মীয়ের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। খসড়া তালিকা প্রকাশের আগেই এই কাজ বিএলওদের শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। তবে ইনিউমারেশন পর্বের শেষে এই ধরনের ট্যাব যুক্ত হওয়ায় চাপ আরও বাড়ল বলেই মনে করছেন বিএলওরা। যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের একটি বুথের বিএলও, অঙ্কের শিক্ষক প্রশান্ত চৌধুরীর কথায়, ‘শেষ মুহূর্তে কেন এই সিদ্ধান্ত? আগে বলা থাকলে এই কাজ করতে সুবিধে হত।’ যদিও কমিশনের এক কর্তার ব্যাখ্যা, যেসব সন্দেহজনক ভোটার খসড়া তালিকা প্রকাশের আগেই নথি দিয়ে দেবেন, তাঁদের আর শুনানির সম্মুখীন হতে হবে না।
এদিকে, যেসব বুথে ইতিমধ্যেই ১০০ শতাংশ ডিজিটাইজেশনের কাজ শেষ হয়েছে, সেখানে এদিন থেকেই তালিকা থেকে বাদ পড়া ভোটারদের নথি টাঙানোর কাজ শুরু হয়েছে। খসড়া তালিকা প্রকাশের আগেই রাজ্যের সমস্ত বুথ বা ভোটকেন্দ্রে এই তালিকা টাঙানোর কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। এখনও পর্যন্ত যা হিসেব, তাতে মোট ৫৮ লক্ষ ৮ হাজার ২০২ জনের নাম বাদ পড়তে চলেছে। এর মধ্যে মৃত, স্থানান্তরিত, অনুপস্থিত ভোটাররা রয়েছেন। শুধু বাদ পড়া ভোটারদের তথ্যই নয়, যেসব ভোটারের ফর্ম ডিজিটাইজেশন হয়েছে, সেই তথ্যও থাকবে তালিকায়। এদিন পর্যন্ত যা হিসেব, তাতে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় যাঁদের নাম ছিল, এমন ২ কোটি ৯৩ লক্ষ ৬৯ হাজার ১৮৮ জন ভোটারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যাঁদের নাম ২০০২ সালের তালিকায় না-থাকলেও বাবা-মা বা আত্মীয়ের নাম আছে, এমন ভোটারের সংখ্যা ৩ কোটি ৮৪ লক্ষ ৫৫ হাজার ৯৩৯।
তবে শুধুমাত্র ডিএম অফিসে শুনানিকেন্দ্র করা নিয়ে আপত্তি তুলেছে একাধিক জেলা। কারণ ডিএম অফিসে পরিসরের অভাব। ইতিমধ্যেই বিষয়টি রাজ্য মুখ্য নির্বাচনি আধিকারিকের দপ্তরে জানিয়েছে একাধিক জেলা। সেইমতো বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।