জমি না দেওয়ায় বাবাকে গাড়ি চাপা দিয়ে খুন করেছিল শাহজাহান, দাবি জমিহারার
বর্তমান | ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
শ্যামলেন্দু গোস্বামী, বারাসত: গাড়ি চাপা দিয়ে খুন করার ছক শাহজাহানের অবশ্য নতুন নয়! চার বছর আগে একই কায়দায় এক বৃদ্ধকে গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেলেছিল শাহজাহান ও তার দলবল। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে ওই বৃদ্ধের পরিবার। শুধু তাই নয়, থানায় অভিযোগ করলে গোটা পরিবারকে নিকেষ করে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছিল সন্দেশখালির ‘বেতাজ বাদশা’ শেখ শাহজাহান। খুনের কারণ ছিল সেই জমি!
২০২১ সাল। সন্দেশখালির রাজবাড়ি এলাকার বাসিন্দা সুবলচন্দ্র মণ্ডলের সাড়ে ৯ বিঘা জমি ছিল বাসন্তী হাইওয়ের পাশে। অভিযোগ, সেই জমি হাতাতে চাপ দিত শাহজাহানের লোকজন। কিন্তু কিছুতেই ‘জমি হাঙর’কে তা দিতে রাজি হননি সুবলবাবু। শাহজাহান সেকারণে তার সশস্ত্র শাগরেদদের পাঠিয়েছিল তাঁর বাড়িতে। পরিবারের দাবি, আগ্নেয়াস্ত্রধারীদের শাসানির কাছেও মাথা নোয়াননি সুবলবাবু। ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর বাড়ি থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে যায় শাহজাহানের শাগরেদরা। আনা হয় রাজবাড়ি লাগোয়া গেস্ট হাউসে। পরে পরিবারের লোকজনকে জানানো হয়, বাসন্তী হাইওয়েতে সুবল মণ্ডল দুর্ঘটনাগ্রস্থ হয়েছেন। বাড়ির লোকজনকে থানায় যেতে নিষেধ করে শাহজাহানের দলবল। সেই সময় পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পারেন, সেটা নিছক দুর্ঘটনা ছিল না। ওইদিন রাতে গেস্ট হাউসে মিটিং হয়। সেখানেও সুবলবাবু তাঁর অবস্থানে অনড় ছিলেন। সেখান থেকে বেরোনোর পর একটি চারচাকা গাড়ি তাঁকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়।
মৃতের মেজো ছেলে সনৎ মণ্ডল এদিন দাবি করেছেন, শাহজাহানই বাবার মৃত্যুর মাস্টারমাইন্ড। তার দলবলই বাবাকে গাড়ি চাপা দিয়ে খুন করেছে। ওরা আমাদের বলেছিল, থানায় যেন না যাই, গেলে কপালে দুঃখ আছে। গোটা পরিবারকেই নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে। এই হুমকির পর বাধ্য হয়ে আমরা চুপ করে যাই। বাবা তো গেলই, বাসন্তী হাইওয়ের পাশে আমাদের সাড়ে ৯ বিঘা জমিও ওরা গায়ের জোরে দখল করে নিয়েছে। আমরা এখন ভূমিহীন। আমার দুই ভাই আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে কলকাতায় চলে গিয়েছেন। তাঁর সংযোজন, সিবিআই যখন এলাকায় ক্যাম্প করেছিল, সমস্ত নথি দিয়ে অভিযোগ করেছিলাম। কিন্তু জমি ফিরে পাইনি। অন্যের দেওয়া জায়গায় কুঁড়েঘরে বসবাস করছি। এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দা হীরা মণ্ডল ও কল্পনা সাহা বলেন, শাহজাহান ও তার দলবলের মস্তানি মানুষ দেখেছে। এই ধরনের ঘটনা নতুন কিছু নয়। পুলিশ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করলে অনেক কিছুই উঠে আসবে।