বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধারে জমি দখল করে বাসের ডিপো! কামারহাটি পুরসভার পরিদর্শনে পর্দা ফাঁস
বর্তমান | ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: সরকারি জমিতে বেসরকারি সংস্থার বাস ডিপো। অথচ, সরকারের কাছে কোনও তথ্য নেই। কামারহাটি পুরসভার বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে লাগোয়া এই বিশাল জমিকে ঘিরে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার পুরসভার সিআইসি সৌমিত্র পুততুণ্ডর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল ওই জায়গা পরিদর্শন করে। ওই বাস সংস্থার প্রতিনিধিদের জানানো হয়, এদিন বিকেল ৪টের মধ্যে ওই জমি ব্যবহারের অনুমতিপত্র দেখাতে হবে। তা নাহলে ওই জমির গেটে তালা লাগিয়ে দেওয়া হবে। যদিও এদিন সংস্থার কোনও প্রতিনিধি পুরসভায় কাগজপত্র নিয়ে হাজির হননি বলে জানা গিয়েছে।
কামারহাটি পুরসভার ১৪ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যবর্তী অংশে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধারে বিশাল জমি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। দক্ষিণেশ্বর ও বরানগর মেট্রো স্টেশন তৈরির সময় ঠিকাদার সংস্থা ওই জায়গায় কাস্টিং ইয়ার্ড তৈরি করেছিল। মেট্রো স্টেশন তৈরি হওয়ার পর তারা চলে যায়। তারপর ওই ফাঁকা জায়গার দখল নেয় বেসরকারি বাস সংস্থা। বর্তমানে ৩১৪ কাঠার জমির পুরোটাই ওই সংস্থার দখলে রয়েছে। সেখানে বাস পার্কিংয়ের পাশাপাশি তৈরি হয়েছে গ্যারাজ। সেখানে গাড়ি মেরামত করা হয়। যদিও বাসস্ট্যান্ড বা গ্যারাজের সরকারি অনুমতি নেই তাদের। এদিন ওই সংস্থার এক কর্মী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমরা জানি পুরসভার অনুমতি নিয়ে এই জায়গায় বাস রাখা হয়। তার জন্য মাসিক টাকাও দেওয়া হয়। যদি এই কর্মীর দাবি সঠিক হয়, তাহলে পুরসভার নাম করে কে বা কারা টাকা নিচ্ছে, তা নিয়ে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
এদিন ওই জায়গা পরিদর্শনের পর সৌমিত্র পুততুণ্ড বলেন, এই বিশাল জমি ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের অধীন। সরকারি অনুমতি ছাড়া তা দখল করে রাখা হয়েছে। তারা পুরসভা বা সরকারি কোষাগারে এক টাকাও জমা দেয় না। সেকারণেই আমরা এদিন ওখানে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সেখানকার কর্মীদের বলা হয়েছে, যদি কোনও কাগজপত্র থাকে, তাহলে তা নিয়ে বিকেল ৪টের মধ্যে পুরসভায় এসে চেয়ারম্যানকে দেখাতে হবে। তা নাহলে আমরা ওই জমিতে গাড়ি ঢোকার রাস্তা বন্ধ করে দেব। প্রয়োজনে গেটে তালা লাগিয়ে দেব।
পুর চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেন, কোনও সরকারি অনুমোদন ছাড়াই ওই জমি ব্যবহার করছে সংস্থাটি। তাদের প্রতিনিধিরা এদিন আসতে পারেননি, তাঁরা আজ, শুক্রবার আসবেন বলে জানিয়েছেন। সরকারি জমি যে এভাবে দখল করে রাখা যায় না, তা তাঁদের স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হবে।