• প্রচারে বেরিয়ে যেতে হবে ধর্মস্থানে, নির্দেশ তৃণমূলের
    আনন্দবাজার | ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ভোটের প্রচারে এ বার ধর্মস্থান দর্শন বাধ্যতামূলক করল তৃণমূল কংগ্রেস।

    গত ১৫ বছরে হওয়া রাজ্যের উন্নয়ন প্রকল্পের প্রচারে প্রায় দেড় মাসের দীর্ঘ কর্মসূচিতে পাড়ায় পাড়ায় মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরুদ্বারে ঘুরবে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। দলের মহিলা সংগঠনকে এই প্রচারে সামনে রাখা হলেও তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি ও দলীয় পদাধিকারীরাও এই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। দলের তরফে রাজ্যব্যাপী পাঠানো নির্দেশিকায় ‘সৌজন্য’ হিসেবেই স্থানীয় মন্দির, মসজিদ বা অন্যান্য ধর্মস্থানে আশীর্বাদ নিতে বলা হয়েছে দলের নেতা-কর্মীদের। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘পাড়ার সংলাপ’। এই সংলাপের শেষে সুবিধাপ্রাপ্তদের মুখেই সরকারি প্রকল্পের সাফল্য প্রচারের পরিকল্পনা করেছে শাসক দল।

    ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর নিয়ে আগামী এক-দেড় মাস ব্যস্ত থাকবেন তৃণমূলের নেতারা। গণনাপত্র পূরণের কাজ সেরে বিধায়ক, সাংসদ-সহ দলের জেলা, ব্লক ও অঞ্চল স্তরের নেতারা শুনানি-পর্ব নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন। এই অবস্থায় সরকারি প্রকল্প রূপায়ণে সাফল্যের বিবরণ নিয়ে প্রচারে নেমে পড়ছে মহিলা তৃণমূল। তাঁদের সেই কর্মসূচি, ‘পাড়ার সংলাপ’-এ বাড়ি বাড়ি ঘুরে, পাড়ায় পাড়ায় জড়ো হয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে সময় কাটাতে বলা হয়েছে। তারই শুরুতে বলা হয়েছে পাড়ার ধর্মস্থানে যাওয়ার কথা। প্রত্যেক বিধানসভা কেন্দ্রে পাঁচ জনকে বেছে নিয়ে তিনটি দল তৈরি করে এই কাজ সারতে বলা হয়েছে। গোটা কর্মসূচি বুঝিয়ে দিতে আগামী সপ্তাহেই মহিলাদের বড় সভা করছে তৃণমূল।

    রাজ্যে ২০১৯ সালে পেশাদার পরামর্শদাতা সংস্থা নিয়োগের পর থেকেই তৃণমূলের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কাজকর্ম পরিকল্পনা ও রূপায়ণে বেশ কিছু বদল এসেছে। আগে দলের ভোট-প্রার্থী বা নেতারা প্রচারে বেরিয়ে ধর্মস্থানে গেলেও এ বার তা এক রকম ‘বাধ্যতামূলক’ করে দেওয়া হয়েছে। দলের তরফে জেলায় জেলায় বলে দেওয়া হয়েছে, ‘প্রতিটি বুথে প্রতি দিন অন্তত তিনটি ব্রতকথা’র আসর আয়োজন করতে হবে’। সেই আসরে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা সম্প্রতি যে ‘উন্নয়নের পাঁচালি’ প্রকাশ করেছেন, তা-ই পাঠ করা হবে। ব্লক স্তরের সাংগঠনিক প্রধানদের বলা হয়েছে একই রকম ব্রতকথার আসরের আয়োজন করতে। তার শেষ পর্বে জেলা স্তরে একটি আসরে সেই কাজ শেষ করার দায়িত্বে থাকবেন জেলা মহিলা সংগঠনের ভারপ্রাপ্তেরা।

    দলের প্রার্থীদের ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে নির্বাচনী কেন্দ্রে রাতযাপনের কর্মসূচি পালন করতে বলেছিল ভোট-কৌশলী সংস্থা। স্থানীয় দলীয় কর্মী ও মানুষের সঙ্গে আন্তরিকতা প্রমাণের সেই কর্মসূচিতে অবশ্য শাসক নেতাদের অনেকেই রুষ্ট হয়েছিলেন। দলের নজরদারিতে ধরা পড়েছিল যে, নেতা ও মন্ত্রীদের একাংশ সে সবে খুব একটা আমল দেননি। এ বার অবশ্য রাতের কর্মসূচি রাখা হয়নি। ব্রতকথার জন্য গঠিত দলকে এলাকার কর্মীদের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ করে সেই কাজ সারতে বলা হয়েছে। তবে এ বারেও পাড়ায় পাড়ায় সফল, কৃতী গুণীজন ও বিশিষ্টদের সম্মাননার আয়োজন করতে বলা হয়েছে দলের নেতা-কর্মীদের।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)