• আউসগ্রামের জঙ্গলে ওগুলো কী? ১৫টি ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়ল একঝাঁক লুপ্তপ্রায় ধূসর নেকড়ে 
    আজ তক | ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • লুপ্তপ্রায় ধূসর নেকড়ের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের বিস্তীর্ণ জঙ্গলাঞ্চলে। তাদের চলাফেরা, অভ্যাস ও বাস্তুতন্ত্রে ভূমিকা বুঝতে আউশগ্রামের বিভিন্ন জঙ্গলে বসানো হয়েছে ১৫টি ট্র্যাপ ক্যামেরা।

    বর্ধমানের ডিএফও সঞ্চিতা শর্মা সংবাদমাধ্যমকে জানান, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে শুরু হয়েছে নেকড়ে গণনার কাজ। তাঁর কথায়, 'আউশগ্রামে এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ১৫টি ধূসর নেকড়ের সন্ধান পাওয়া গেছে। সমীক্ষা শেষে সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। পশ্চিম বর্ধমানের তুলনায় পূর্ব বর্ধমানে নেকড়ের সংখ্যা বেশি বলে মনে হচ্ছে।' জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে সচেতনতা বাড়ানোর দিকেও জোর দেওয়া হবে।

    আউশগ্রামে ৬ হাজার হেক্টর জুড়ে নজরদারি
    পানাগড় রেঞ্জে রয়েছে আটটি ক্যামেরা এবং আউশগ্রাম-১ ও ২ ব্লকের বিভিন্ন জঙ্গলে ১৫ দিন অন্তর বদলে বদলে চলছে নজরদারি। আদুরিয়া, খাণ্ডারি, যাদবগঞ্জ, সব এলাকাতেই চলছে সমীক্ষা। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক অর্কজ্যোতি মুখোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে জানান, পানাগড়, দুর্গাপুর ও গুসকরার তিনটি রেঞ্জে ক্যামেরা লাগানো আছে। গণনা শেষে সম্পূর্ণ রিপোর্ট বনদফতরের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

    পশ্চিম বর্ধমানেও নেকড়ে-দল বাড়ছে
    বনদপ্তর সূত্রে খবর, জেলায় অন্তত তিনটি পৃথক নেকড়ে-দলের অস্তিত্ব মিলেছে, মোট সদস্যসংখ্যা ২০-এরও বেশি। দুর্গাপুর, কাঁকসা, লাউদোহা ও মলানদিঘি জুড়ে সমীক্ষা চলছে। পানাগড়ের রেঞ্জার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জঙ্গলে চোরাশিকার কম হওয়ায় নেকড়ে-সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীর সংখ্যা বেড়েছে।

    সংরক্ষণের জন্য সমীক্ষা জরুরি
    বিশেষজ্ঞদের মতে, দ্রুত কমে যাওয়া ভারতীয় ধূসর নেকড়েকে রক্ষার ক্ষেত্রে এই সমীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যাভ্যাস, চলাফেরার ধরণ, বাস্তুতন্ত্রে ভূমিকা-সবই নথিবদ্ধ করা হচ্ছে। এতে গ্রামবাসীদের সচেতন করতেও সুবিধা হবে। নেকড়ের উপস্থিতি পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখতে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

    হায়নার সংখ্যাও বাড়ছে
    ধূসর নেকড়ের পাশাপাশি আউশগ্রামে বেড়েছে হায়নার সংখ্যাও। হায়না ও নেকড়ের খাদ্যাভ্যাসে ভিন্নতা রয়েছে। হায়না সাধারণত মৃতদেহের মাংসে নির্ভরশীল, আর নেকড়ে জীবন্ত শিকার করে। ট্র্যাপ ক্যামেরায় দেখা গেছে, খরগোশ, ময়ূর, এমনকি গ্রামাঞ্চলের ছাগলও শিকার করছে নেকড়েরা।

    গত বছর পশ্চিম বর্ধমানে নেকড়ে পিটিয়ে মারার ঘটনার পর বনদফতর আরও সতর্ক হয়েছে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছিল এই বিস্তৃত সমীক্ষার পরিকল্পনা। উদ্দেশ্য, নেকড়ে সংরক্ষণ এবং গ্রামবাসীদের সচেতন করা।

     
  • Link to this news (আজ তক)