দেবব্রত ঘোষ: মা জীবিত। অথচ ভুয়ো ডেথ সার্টিফিকেট বের করে পেনশনের টাকা হাতিয়ে নিল ছেলে! অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। চাঞ্চল্য়কর ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার লিলুয়ায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, লিলুয়ার চকপাড়ার বাসিন্দা বীণাপানি দাস। তাঁর দুই ছেলেই কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী। বড় ছেলে থাকেন হায়দরাবাদে, আর ছোট ছেলে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে। বাড়িতে একাই থাকেন সত্তরোর্ধ্ব ওই বৃদ্ধা। তাঁকে দেখাশোনা করার জন্য় আয়া আছে। স্বামী ক্ষীরোদচন্দ্র দাস কাস্টমসে চাকরি করতেন। ১৯৯৬ সালে অবসর নেওয়ার পর, প্রচুর টাকা জমে যায় তাঁর পেনশন অ্যাকাউন্টে। ২০১৮ সালে প্রয়াত হন ক্ষীরোদচন্দ্র। এরপর নিয়মাফিক স্ত্রীর নামে চালু হয় পেনশন অ্য়াকাউন্ট।
ওই বৃদ্ধার দাবি, তাঁর পেনশন অ্য়াকাউন্ট সামলাতেন ছোট ছেলে তপন। সে-ই নাকি মায়ের ভুয়ো ডেথ সার্টিফিকেট জমা করে পেনশন বন্ধ করে দিয়েছে! এমনকী, পেনশন অ্য়াকাউন্টে যে টাকা ছিল, সেই টাকাও তিনি তুলে নিয়েছেন অভিযোগ। ওই বৃদ্ধার আরও অভিযোগ, স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে তাঁর উপর অকথ্য অত্যাচার শুরু করে ছোট ছেলে। মেরে পা ভেঙে দেয়।
দাবি একটাই, অবিলম্বের বন্ধ হয়ে যাওয়া পেনশন চালু করুক সরকার। ছোট ছেলের বিরুদ্ধে লিলুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বীণাপানি। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। ছোট ছেলের অবশ্য দাবি, 'দাদা আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছে। আমি-ই মা-কে দেখাশোনা করতাম। কোনওদিন মারধর করিনি'।
এদিকে হুগলিতে আশি বছরের বৃদ্ধাকে রীতিমতো মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন গুণধর ছেলে। বিডিও অফিসে গিয়ে বলেও এসেছে, তাঁর মা মৃত, বেঁচে নেই। অশীতিপর ওই বৃদ্ধা ঠাই হয়েছে হাসরাতাল চত্বরে, খোলা আকাশে নিচে। হাসপাতালে গেটের কাছে একা পড়ে রয়েছেন তিনি। সামনে আবার জঙ্গল। শিয়ালের উপদ্রব। সরকারি কোনও প্রকল্পের মেলেনি সাহায্য। ভয়াবহ পরিস্থিতি।
ওই বৃদ্ধাকে দেখে বিচলিত স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁকে চা, পাউরুটি খাওয়ান স্থানীয় এক দোকানদার। পুরে স্থানীয় পুরশুড়া ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালের এক রাঁধুনি ভাত দিয়ে যান। কিন্ত তাতেও আপত্ত জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বেশ কয়েক বছর আগে প্রয়াত হন স্বামী। তারপর থেকে ওই বৃদ্ধার এই হাল। ঞ্চায়েত সমিতি, বিডিও অফিস,স্থানীয় শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কেউ কিছুই করেননি বলে অভিযোগ। ওই বৃদ্ধার দাবি, বিডিও অফিস থেকে তাকে বলা হয়েছে সব কিছুই দেওয়া হবে। কিন্তু কিছুই পাননি তিনি। কান্না ভেজা কণ্ঠে তাঁর গলায় শোনা গেল, 'সরকার আমাকে দেখুন। একটু যেন খেতে পাই। আর কত দিন রাস্তার মানুষ আমাকে দেখবে। ছেলেকে শাস্তি দিন।