• শিশুকে নিগ্রহ, বৃদ্ধকে ২০ বছরের কারাদণ্ড মালদহে
    আজকাল | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: দুই নাবালিকার উপর যৌন নির্যাতনের ঘটনায় দোষীকে ২০ বছরের কারাবাসের নির্দেশ। শুক্রবার মালদহ জেলা আদালত দোষী মসিরুদ্দিন সবজি'র উদ্দেশ্যে এই নির্দেশ দিয়েছে। সাড়ে চার বছর আগে দোষী চকোলেটের লোভ দেখিয়ে বাড়িতে দুই নাবালিকাকে ডেকে এনে এই ঘটনা ঘটিয়েছিল। কারাবাসের নির্দেশ ছাড়াও দোষীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও দুই বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলায় মোট ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছিল। 

    জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের ৩মে মালদহের ইংরেজবাজার থানা এলাকার বাসিন্দা মসিরুদ্দিন দুই নাবালিকার উপর যৌন নির্যাতন চালায়। দু'জনকেই সে চকোলেটের লোভ দেখিয়ে বাড়িতে ডেকে নিয়ে এসেছিল। বিষয়টি নজরে আসে এক শিশুকন্যার মায়ের। এরপর মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলে তাঁর কাছে বিষয়টি স্পষ্ট হয়। স্থানীয় ইংরেজবাজার থানায় এই নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তদন্তে নেমে পুলিশ ৬১ বছরের অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে জেরা করে। প্রথমে অস্বীকার করলেও জেরায় মসিরুদ্দিন ভেঙে পড়ে ঘটনার কথা স্বীকার করে। আদালতে চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। শুরু হয় বিচার। 

    দীর্ঘ সওয়াল জবাব শেষে আদালত শুক্রবার মসিরুদ্দিনের সাজা ঘোষণা করে। সরকারি আইনজীবী সার্থক দাস জানান, দোষীকে ২০ বছরের কারাবাসের সঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে আরও দু'বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। পাশাপাশি দুই নাবালিকাকে ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

    এর আগে ২০২২ সালের একটি ঘটনায় ঘরে ঢুকে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এক নাবালিকাকে বেঁধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগে অভিযুক্ত এক প্রতিবেশী যুবককে মালদা জেলা আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে। সেই মামলায় ১৭ জন সাক্ষীর জবানবন্দির ভিত্তিতে তিন বছরের মধ্যেই রায় ঘোষণা হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছিল নির্যাতিতার পরিবার।

    জেলা আদালতের এক আইনজীবী বলেন, যৌন নির্যাতনের মামলায় অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সামাজিক সম্মানের ভয়ে লোকে অভিযোগ করতে এগিয়ে আসেন না। আবার কেউ যদি এগিয়েও আসেন তবে অনেক ক্ষেত্রেই তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতা তাঁদের মামলার বিষয়ে নিরুৎসাহিত করে তোলে। আবার সাক্ষীও অনেক সময় বিরূপ হয়ে যায়। ফলে পুলিশের হাতে প্রমাণ থাকলেও সাক্ষীর সাক্ষ্যদানের অভাবে মামলার 'মেরিট' নষ্ট হয়ে যায়। 

    অন্যদিকে, শুক্রবার এই রায়ের পর আইনজীবীদের বক্তব্য, একাধিক মামলায় দ্রুত বিচার, কঠোর শাস্তি এবং উচ্চ ক্ষতিপূরণ, সব মিলিয়ে মালদহ আদালতের এই ধারাবাহিকতা নাবালিকা সুরক্ষায় নতুন বার্তা দিচ্ছে।
  • Link to this news (আজকাল)