• SIR ফর্ম ভরেননি, ডিটেনশন ক্যাম্পের ভয় দেখাতেন প্রতিবেশীরা! মালদহে ‘আত্মঘাতী’ প্রৌঢ়
    প্রতিদিন | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • বাবুল হক, মালদহ: ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ‘এসআইআর আতঙ্কে’ দুই ব্যক্তির মৃত্যু মালদহে। শুক্রবার রাতে নির্বাচন কমিশনের সাইটে বাবার নাম ভুল থাকার আতঙ্কে মারা গিয়েছিলেন এক যুবক! শনিবার সকালে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ‘আত্মঘাতী’ হলেন আরও এক ব্যক্তি। মৃতের নাম আবুল কালাম। এনুমারেশন ফর্মফিলাপ করতে পারেননি তিনি! অভিযোগ, ডিটেনশন ক্যাম্পের ভয় দেখাতেন প্রতিবেশীদের কেউ কেউ। সেজন্য ডিটেনশন ক্যাম্পের আতঙ্ক তাঁকে তাড়া করছিল বলে অভিযোগ। নিজের বাড়িতেই এদিন সকালে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়।

    স্থানীয় সূত্রে খবর, ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বালুভোরট গ্রামে। কর্মসূত্রে তিনি দীর্ঘদিন জয়পুরে থেকেছেন। সেখানে কোনও একটি হোটেলে কাজ করতেন। তবে অবিবাহিত আবুল কালাম সেই কাজ ছেড়ে জয়পুর থেকে মালদহের গ্রামের বাড়িতে এসে থাকছিলেন। রাজ্যে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এলাকার অন্যান্যরা এনুমারেশন ফর্ম পেলেও তিনি পাননি! কিন্তু কেন? জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির ভোটার, আধার কার্ড ছিল না। শুধু তাই নয়, ২০০২ সালের ভোটার তালিকাতেও তাঁর বাবা-মায়ের নাম ছিল না!

    এসআইআর আবহে এনুমারেশন ফর্ম না পেয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন ওই ব্যক্তি। ডিটেনশন ক্যাম্পে তাঁর জায়গা হতে পারে! বাংলাদেশেও পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে, এমন সব কথাও প্রতিবেশীদের কেউ কেউ বলছিলেন বলে অভিযোগ। এসবে প্রবল আতঙ্কে ভুগছিলেন ওই ব্যক্তি। সেই আতঙ্কেই তিনি ‘আত্মঘাতী’ হয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুমান। মৃতদেহ দেখে খবর দেওয়া হয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানায়। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

    শুক্রবার রাতে এসআইআর আতঙ্কে জেলারই এক যুবক মারা গিয়েছিলেন। বছর ৩২-এর তৃণমূল কর্মী বরকত শেখের বাড়ি বৈষ্ণবনগর থানার অন্তর্গত কালিয়াচক-৩ নম্বর ব্লকের চকসেহেরদি গ্রামে। তাঁর বাবার নাম রহুল শেখ। অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেখা যায় রশুল শেখের জায়গায় কেবল ‘শেখ’ রয়েছে। বাবা-মায়ের নাম ভুল এলে এসআইআরের ফর্মে সমস্যা দেখা দেবে। এই কথা আগেই শোনা গিয়েছে। ফলে বাবার নাম ভুল আসায় দুশ্চিন্তা গ্রাস করেছিল ছেলেকে। কীভাবে এই নাম সংশোধন হবে, তাই নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যেতেও শুরু করেছিলেন তিনি। বিডিও অফিসে গিয়েও এই বিষয়ে কোনও সুরাহা হয়নি বলে পরিবারের তরফে অভিযোগ। সেই আতঙ্কেই তিনি মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)