যোগীরাজ্যে ধৃত ভুয়ো আইএএস সহ ৩, নীলবাতি গাড়ি, ১০ দেহরক্ষী, ৬০ হাজার বেতনের স্টেনোগ্রাফার
বর্তমান | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
গোরক্ষপুর: নীলবাতি গাড়ি। ১০ জন সশস্ত্র দেহরক্ষী। গাড়ির সামনে সোনালি রঙের পাতে আইএএস লেখা নেমপ্লেট। ৬০ হাজার টাকা বেতনের স্টেনোগ্রাফার। কেতাদুরস্ত পোশাক। হাবে-ভাবেও গুরুগম্ভীর আমলা। আসলে সবটাই ভুয়ো! ভুয়ো আইএএস অফিসার পরিচয় দিয়ে বড়সড় প্রতারণা ফাঁদ পেতে বসেছিল বিহারের সীতামারির বাসিন্দা ললিত কিশোর। নিজেকে আইএএস আধিকারিক গৌরব কুমার বলে পরিচয় দিত সে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়তে তদন্তে নামে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তথ্যপ্রমাণ হাতে পাওয়ার পর গত বুধবার তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের জালে ধরা পড়েছে ললিতের শ্যালক অভিষেক শর্মা ও তার সহযোগী পরমানন্দ গুপ্তাও।জানা গিয়েছে, গোরক্ষপুরের চিলুয়াতালে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল ললিত। জুনগিয়া বাজারে ছিল তার অফিস। সেখান থেকেই আইএএস পরিচয় দিয়ে ভুয়ো তল্লাশি, টেন্ডার ও চাকরির প্রতিশ্রুতি এবং বড়োসড়ো তোলাবাজির র্যাকেট চালাচ্ছিল সে। সকলের চোখে ধুলো দিতে নীল বাতি লাগানো গাড়ি ব্যবহার করত। গাড়ির সামনে জ্বলজ্বল করত সোনালি রঙের পাতে আইএএস পরিচয় দেওয়া নেমপ্লেট। মাসিক ৩০ হাজার টাকা বেতনে ১০ জন বন্দুকধারী নিরাপত্তারক্ষীও ছিল। তার অফিস থেকে প্রচুর ভুয়ো পরিচয়পত্র, ল্যাপটপ, গহনা, নগদ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। তদন্তে জানা গিয়েছে, গৌরব কুমার নামে এক আইএএস আধিকারিক রয়েছেন। তাঁর নামে পরিচয় পত্রেই এআই ব্যবহার করে নিজের ছবি বসিয়ে দিয়েছিল ললিত।সম্প্রতি গোটা টিম নিয়ে একটি বেসরকারি স্কুলে ‘হানা’ দিয়েছিল ভুয়ো আইএএস। সেখান থেকে বিপুল অর্থ আদায় করে সে। ভাতাতের একটি স্কুল থেকে তার সহযোগীরা ৫৫ লক্ষ টাকা দাবি করে বলে অভিযোগ। উত্তরপ্রদেশ, বিহারের পাশাপাশি ঝাড়খণ্ড-মধ্যপ্রদেশেও ললিতের প্রতারণার জাল ছড়ানো ছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। এক অভিযোগকারী জানিয়েছেন, টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার নামে তাঁর থেকে ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ও দু’টি গাড়ি নিয়েছে ওই ভুয়ো আইএএস। অতিরিক্ত পুলিস সুপার (সদর) অভিনব ত্যাগী জানিয়েছেন, আরও বহু মানুষ এই র্যাকেটের দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন। তাঁদের এগিয়ে এসে অভিযোগ জানাতে অনুরোধ করা হচ্ছে।