• জানুয়ারি থেকে রেশনের বরাদ্দে কমছে চাল, গমের পরিমাণ বৃদ্ধি, রাজ্যের অনুরোধ রাখল না কেন্দ্র
    বর্তমান | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আগামী বছরের শুরু থেকে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় থাকা রাজ্যের রেশন গ্রাহকদের বরাদ্দে কিছু পরিবর্তন করা হচ্ছে। রাজ্যের খাদ্যদপ্তরের তরফে আগের মতোই বরাদ্দ অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রক। এখন জাতীয় প্রকল্পের এসপিএইচ এবং এসপিপিএইচ শ্রেণির রেশন গ্রাহকদের মাসে ৫ কেজি করে খাদ্যশস্য বরাদ্দ করা হয়। এর মধ্যে এখন ২ কেজি গম এবং ৩ কেজি চাল দেওয়া হয়। অন্ত্যোদয় গ্রাহকরা পরিবার পিছু মাসে ৩৫ কেজি করে খাদ্যশস্য পায়। তার মধ্যে চাল থাকে ২০ কেজি, গম ১৫ কেজি।

    আগামী ১ জানুয়ারি থেকে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রক চালের পরিমাণ কমিয়ে গমের পরিমাণ বৃদ্ধি করছে। ৫ কেজির মধ্যে ৩ কেজি গম ও ২ কেজি চাল থাকবে। অন্ত্যোদয় শ্রেণির গ্রাহকরা পরিবার পিছু মাসে ২০ কেজি গম ও ১৫ কেজি করে চাল পাবে। জানুয়ারি থেকে গ্রাহকের সংখ্যা অনুযায়ী এই ভিত্তিতেই  রাজ্যকে খাদ্যশস্য বরাদ্দ করবে কেন্দ্র।

    খাদ্যমন্ত্রকের তরফে রাজ্যের খাদ্যদপ্তরকে জানানো হয়েছে, গ্রাহককে কী পরিমাণ খাদ্যশস্য দেওয়া হবে, সেটা রাজ্যই ঠিক করে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার যে বরাদ্দ করে, তার থেকে কম দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ রাজ্য  সরকার চাইলে এখনও মাথাপিছু ৩ কেজি করে চাল দিতেই পারে। কিন্তু তার জন্য গমের পরিমাণ কমানো যাবে না। ৩ কেজি করেই গম দিতে হবে। রাজ্য সরকার চালের বরাদ্দ একই রাখার অনুরোধ করার পিছনে অবশ্য বিশেষ কারণ আছে। রাজ্যের রেশন গ্রাহকদের জন্য যে চাল প্রয়োজন হয়, তা রাজ্য ঩থেকেই সংগ্রহ করা করা হয়। চাষিদের কাছ থেকে ন্যূনতম সংগ্রহ মূল্যে যে ধান সরকারি উদ্যোগে কেনা হয়, তা থেকে উৎপাদিত চালই সরবরাহ হয় রেশনে। সেন্ট্রাল ও স্টেট পুলের জন্য রাজ্য আলাদাভাবে চাল মজুত করে। সেন্ট্রাল পুলের চাল থেকে জাতীয় প্রকল্পের আওতাধীন রেশন গ্রাহকদের জন্য  ছাড়াও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ও স্কুলের মিড ডে মিল প্রকল্পের প্রয়োজনীয় চাল সরবরাহ করা হয়। চলতি ২০২৫-২৬ খরিফ মরশুমে রাজ্য সরকার মোট ৬৭ লক্ষ টন ধান চাষিদের কাছ থেকে কেনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। এর মধ্যে সেন্ট্রাল পুলের জন্য কেনা হবে ৪১ লক্ষ ১৫ হাজার টন। এখন কেন্দ্রীয় সরকার রেশন গ্রাহকদের চালের বরাদ্দ কমিয়ে দিলে সেন্ট্রাল পুলে কম চাল লাগবে। এতে আখেরে ক্ষতি হবে রাজ্যের চাষিদের। 

    রেশন ডিলারদের সর্বভারতীয় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু বিকল্প প্রস্তাব দিয়ে বলেছেন, ‘রাজ্য পরিকল্পনা মতো চাষিদের কাছ থেকে ধান কিনুক। অতিরিক্ত যে চাল হবে, তা এফসিআই-কে দেওয়া হোক বাইরের রাজ্যে সরবরাহের জন্য।’ তাঁদের দাবি, কেন্দ্রের কাছে বেশি পরিমাণ গম মজুত থাকার কারণেই এর বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)