• বিষ্ণুপুরে হাতির হানায় চাষির মৃত্যু, ক্ষোভ
    বর্তমান | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: গভীর রাতে হাতির হানা থেকে ফসল বাঁচাতে গিয়েছিলেন চাষিরা। হাতির পাল এলাকা ছেড়ে গেলে তাঁরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। কিন্তু, পিছনের জঙ্গলে যে তখনও তিনটি হাতি রয়েছে-তা তাঁরা বুঝতে পারেননি। অন্ধকারের মধ্যে হঠাৎই হাতি এক চাষিকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছাড় মারলে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতের নাম রামপদ হেমব্রম(৪০)। শুক্রবার রাতে বিষ্ণুপুরের বেলশুলিয়া পঞ্চায়েতের কুড়চিডাঙায় এঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। রাতেই পুলিশ ও বনকর্মীরা এলাকায় পৌঁছয়। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ মৃতের বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানান।

    বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত ডিভিশনের এডিএফও বীরেনকুমার শর্মা বলেন, শুক্রবার রাতে বাসুদেবপুরের জঙ্গল থেকে ৩০টি হাতিকে পশ্চিম মেদিনীপুরের রূপনারায়ণ ডিভিশনের দিকে পাঠানো হচ্ছিল। সেই সময় ওই ব্যক্তি মাঠে হাজির হয়েছিলেন। অন্ধকারে হাতির হানায় তাঁর মৃত্যু হয়। সোমবার তাঁর পরিবারকে পাঁচলক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে সরকারি নিয়ম মেনে পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া হবে।

    বড়জোড়ার জঙ্গলে প্রায় চারমাস কাটানোর পর প্রায় ৫৫টি হাতি চারটি দলে ভাগ হয়ে দলমায় ফেরার পথ ধরেছিল। তার মধ্যে ৩০টি হাতির একটি দল বৃহস্পতিবার সোনামুখীর জঙ্গল থেকে দ্বারকেশ্বর নদ পেরিয়ে বিষ্ণুপুরের জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় হাতিগুলি একাধিক দলে ভাগ হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের দিকে রওনা দিয়েছিল। কয়েকটি হাতি বগডহরা গ্রামে ঢুকে ফসলের ক্ষতি করে। আরও কয়েকটি হাতি রাত ১টা নাগাদ আমডহরা বিটের কুড়চিডাঙার দিকে চলে যায়। হাতি আসার খবর পেয়ে গ্রামের অন্য চাষিদের সঙ্গে রামপদবাবু ফসল বাঁচাতে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু, হঠাৎ পিছনের জঙ্গল থেকে তিনটি হাতি বেরিয়ে আসে। দু’টি হাতি রামপদবাবুকে তাড়া করে। একটি হাতি তাঁকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছাড় মারলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

    মৃতের স্ত্রী সজনী হেমব্রম বলেন, আমাদের তিন বিঘা জমিতে আলু লাগানো হয়েছে। হাতি এসেছে শুনে রাত ১২টা নাগাদ স্বামী ছেলেকে নিয়ে জমিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু, হাতি আক্রমণ করবে-সেটা তিনি ভাবতে পারেননি।

    কুড়চিডাঙা গ্রামের বাসিন্দা লালমোহন মুর্মু বলেন, হাতির পালটি গড়বেতার দিকে চলে যাওয়ায় আমরা নিশ্চিন্ত হই। কিন্তু, তিনটি হাতি যে পিছনের জঙ্গলে রয়ে গিয়েছে, সেটা কেউ টেরই পাইনি। দু’টি হাতি হঠাৎ রামপদবাবুকে আক্রমণ করে। আমরা চিৎকার করলেও তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)