নদীয়া জেলায় ইনিউমারেশন ফর্মে ‘অসঙ্গতি’ রয়েছে ৮ লক্ষ ভোটারের
বর্তমান | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: নদীয়া জেলায় ইনিউমারেশন ফর্মে ‘অসঙ্গতি’ রয়েছে প্রায় আট লক্ষ ভোটারের। সেগুলিকে আবার যাচাই করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যদিও তাঁদের নাম খসড়া তালিকায় রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে, বিএলওদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে এফআইআর করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনকে। কোনও এলাকায় বিএলও হেনস্তা কিংবা হুমকির মুখে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনের তরফ থেকে থানায় অভিযোগ করা হবে। খসড়া তালিকা প্রকাশের পর শুরু হবে শুনানি প্রক্রিয়া। তার আগে শেষবারের মতো যাচাই প্রক্রিয়া সারতে চাইছে কমিশন।
ফর্ম ডিজিটাইজেশনের কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ১৬ তারিখ খসড়া তালিকাও প্রকাশ করা হবে। তার আগে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে একটি তালিকা পাঠানো হয়েছে, জেলা প্রশাসনের কাছে। তাতে দেখা গিয়েছে, নদীয়া জেলায় ৭ লক্ষ ৮১ হাজার ৯১১ জন ভোটারের ফর্মে ‘অস্বাভাবিক অসঙ্গতি’ পাওয়া গিয়েছে। অনেকে ভোটারের বাবার নাম মিলছে না। তার থেকেও চাঞ্চল্যকর বিষয় হচ্ছে, অনেক ভোটার ও তার বাবার বয়সের পার্থক্য ১৫ বছরের কম। আবার ভোটারদের সঙ্গে ঠাকুরদা-ঠাকুমা’র বয়সের পার্থক্য ৪০ বছরের কম। এমনকি, অনেক ভোটারের ক্ষেত্রে লিঙ্গে মিসম্যাচ করেছে। এরকম অস্বাভাবিক অসঙ্গতি সবচেয়ে বেশি পাওয়া গিয়েছে কালীগঞ্জ বিধানসভায়। সেখানে ৫৪ হাজার ভোটারের ফর্মে অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, করিমপুর বিধানসভায় ৪৪ হাজার ৭১৭টি ফর্ম, তেহট্ট বিধানসভায় ৪৮ হাজার ৫৪টি ফর্ম, পলাশিপাড়া বিধানসভায় ৫১ হাজার ৯৩৬টি ফর্ম, নাকাশিপাড়া বিধানসভায় ৫৩ হাজার ৬৭৯টি ফর্ম, চাপড়া বিধানসভায় ৪৬ হাজার ৯৩৪টি ফর্ম, কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভায় ৪০ হাজার ৮৭৫টি ফর্ম, নবদ্বীপ বিধানসভায়, ৪৩ হাজার ৪৯২টি ফর্ম, কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভায় ৪২ হাজার ৩৮২টি ফর্ম, শান্তিপুর বিধানসভায় ৩৯ হাজার ৬৫৩টি ফর্ম, রানাঘাট উত্তর পশ্চিম বিধানসভায় ৪০ হাজার ১১২টি ফর্ম, কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভায় ৪৩ হাজার ৩৭৬টি ফর্ম, রানাঘাট উত্তর পূর্ব বিধানসভায় ৫২ হাজার ৩২টি ফর্ম, রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভায় ৫০ হাজার ১৭৪টি ফর্ম, চাকদহ বিধানসভায় ৩৭ হাজার ৯৮০টি ফর্ম, কল্যাণী বিধানসভায় ৪৭ হাজার ৯৬১টি ফর্ম, হরিণঘাটা বিধানসভায় ৪৪ হাজার ২৮৫টি ফর্মে অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে। প্রশাসনের আধিকারিকদের কথায়, যাদের ফর্মে অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে তাঁদের ফর্মগুলো আবার যাচাই করা হবে। যদিও তাঁদের অধিকাংশদের নাম খসড়া তালিকায় থাকবে। এই পরিস্থিতিতে বিএলওদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে হবে। অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটলেই এফআইআর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনকে। তবে মনে করা হচ্ছে এই অসঙ্গতি ফর্ম পাওয়া ভোটারদেরও শুনানিতে ডাকা হতে পারে। উল্লেখ্য, নদীয়া জেলার ২০০২ সালের ভোটার তালিকা অনুয়ায়ী ম্যাপিং হয়নি ২লক্ষ ৫৫ হাজার ভোটারের। মৃত, স্থানান্তরিত, অনুপস্থিত, ডুপ্লিকেটের কারণে বাদ পড়ছে ২লক্ষ ১৬ হাজার ভোটারের নাম।