• বইমেলায় মাইকের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রশাসনের, অবস্থান ক্ষুব্ধ প্রকাশকদের, আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডে নজিরবিহীন সংঘাত
    বর্তমান | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: বৃহস্পতিবার থেকে আলিপুরদুয়ার শহরের প্যারেড গ্রাউন্ডে জেলা বইমেলা শুরু হয়েছে। ওই মাঠে বইমেলার পাশেই শনিবার থেকে রাজ্যস্তরের দু’দিনের আদিবাসী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও শুরু হয়েছে। এই আদিবাসী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য শনি ও রবিবার দু’দিন জেলা বইমেলায় মাইক বাজানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। এই ফতোয়ায় ক্ষুব্ধ বইমেলায় অংশ নেওয়া প্রকাশকরা। এই নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে প্রকাশকরা শনিবার দুপুরে বইমেলার মূল গেট বন্ধ করে দিয়ে অবস্থানে বসেন। প্রকাশকদের দাবি, বইমেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মাইক না বাজলে বইমেলা জমবে না। ফলে মার খাবে বই বিক্রি।

    এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়ে প্রশাসন ও বইমেলার আয়োজকরা। এই উদ্ভূত সমস্যা কাটাতে এদিন বইমেলা প্রাঙ্গণ থেকে স্থানীয় বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে ফোন করেন। গ্রন্থাগারমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর বিধায়ক ও বইমেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ভাস্কর মজুমদারের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। প্রকাশকরা খুলে দেন জেলা বইমেলার গেট।

    এবছর আলিপুরদুয়ার জেলা বইমেলায় ৯১টি স্টল এসেছে। এক স্টল মালিক সমাপন চক্রবর্তী বলেন, রাজ্যের সব জেলার বইমেলায় বহু বছর ধরে স্টল দিচ্ছি। কিন্তু কোথাও শুনিনি বইমেলায় মাইক বাজানো যাবে না। বইমেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মাইক না বাজলে বইমেলা তো জমবে না। আর একজন স্টল মালিক শৈবাল ভৌমিক বলেন, মাইক না বাজলে বইমেলা জমবে না। ফলে বইমেলায় আমাদের বই বিক্রি মার খাবে। কলকাতা থেকে এসে স্টল দিয়ে যদি বই-ই বিক্রি করতে না পারি তাহলে তো লোকসানের মুখে পড়তে হবে আমাদের। তাই বাধ্য হয়ে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে হয়েছে।

    যদিও জেলাশাসক আর বিমলা বলেন, বইমেলাও একটি সরকারি অনুষ্ঠান। প্যারেড গ্রাউন্ডে শনি ও রবি দু’দিন আদিবাসী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কথা বইমেলার উদ্যোক্তাদের আগাম জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কারণ এটা রাজ্যস্তরের অনুষ্ঠান। সেজন্য উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনে ফালাকাটা বা জটেশ্বরে জেলা বইমেলা করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু বইমেলার উদ্যোক্তারা সে কথা শোনেননি। ফলে কিছু করার নেই।

    প্রসঙ্গত, প্যারেড গ্রাউন্ডে বইমেলা চলবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বইমেলায় প্রতিদিনই কবিতা পাঠ, অঙ্কন, সংগীত, নৃত্য ও আলোচনাচক্র সহ নানা অনুষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু প্রশাসন মাইক বাজানোর ফতোয়া জারি করায় বইমেলার উদ্যোক্তারা শনি ও রবিবারের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন। অস্থায়ী জেলা গ্রন্থাগারিক শিবনাথ দে বলেন, সমস্যা মিটে গিয়েছে। বইমেলায়  মাইক ছাড়াই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। 

    • একদিকে জেলা বইমেলার বাইরে বিক্ষোভ (বাঁয়ে)। অন্যদিকে  আদিবাসী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিশেষ নৃত্যানুষ্ঠান। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)