উদাসীন রেল, রাজ্যের জমিতেই জিআরপি থানা সরানোর উদ্যোগ
বর্তমান | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
শুভ্র চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা: যাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা রেল পুলিশের (জিআরপি) সিংহভাগ থানার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। কোনও থানায় সামান্য বৃষ্টিতে ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ছে। কোথাও আবার বৃষ্টি হলে জল ঢুকে পড়ে থানার মধ্যে। তাতে নষ্ট হচ্ছে মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত নানা নথিপত্র। কোথাও আবার অফিসারদের বসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও নেই। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দিনের পর দিন ডিউটি করতে হচ্ছে জিআরপিতে কর্মরত পুলিশকর্মীদের। রেল যাত্রীরা অপরাধের শিকার হয়ে থানায় গেলে তাঁদের বসতে পর্যন্ত দেওয়া যায় না ভালোভাবে। তাই থানাগুলির সংস্কারের জন্য জিআরপি কর্তাদের তরফে বারবার চিঠি, মেল করা হলেও রেল আধিকারিকরা বিষয়টি নিয়ে উদাসীন বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে রেল স্টেশন সংলগ্ন রাজ্যের জমিতেই থানা তৈরির উদ্যেগ নিয়েছেন জিআরপি আধিকারিকরা।
যাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়া ও রেল লাইন সংলগ্ন এলাকায় অপরাধ দমনে রাজ্য পুলিশের তরফে জিআরপি থানা তৈরি করা হয়। এর জন্য জায়গার ব্যবস্থা করে দেয় রেল। প্ল্যাটফর্ম বা প্ল্যাটফর্ম সংলগ্ন এলাকায় থানাগুলি তৈরি হয়। রাজ্য পুলিশের অন্যান্য থানার সংস্কার ও আধুনিকীকরণ করা গেলেও জিআরপি থানাগুলি পড়ে রয়েছে সেই তিমিরেই। এই কাজের জন্য রেলের কাছে অনুমতি নিতে হয়। নবান্ন সূত্রে খবর, রেলের কাছে বারবার এনিয়ে দরবার করা হলেও তাদের কোনও হেলদোলই দেখা যাচ্ছে না। যে কারণে জিআরপি থানাগুলি মান্ধাতার আমলে পড়ে থাকছে। চারটি রেল পুলিশ ডিস্ট্রিক্টের ৪৪টি জিআরপি থানার মধ্যে ৩০টির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ বলে খবর। বিভিন্ন থানা ভিজিট করার পর আধিকারিকদের নজরে এসেছে, অধিকাংশ থানাতেই অফিসারদের আলাদা বসার কোনও ব্যবস্থা নেই। সুপ্রিম কোর্টের গাইড লাইন অনুযায়ী চাইল্ড ফ্রেন্ডলি কর্ণার, মহিলাদের আলাদা লক আপ, পৃথক ইন্টারোগেশন রুম—এর কোনওটিই তৈরি করা যাচ্ছে না। থানাকে আধুনিকভাবে গড়ে তুলতে না পারার জন্য নতুন প্রযুক্তিও কাজে লাগানো যাচ্ছে না বলে দাবি। এমনকি, অভিযুক্তকে আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়েও একাধিক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
বারবার বলার পরও রেল এ ব্যাপারে কোনও উদ্যেগ না নেওয়ায় জিআরপি থানাগুলির সংস্কার ও আধুনিকীকরণের পরিকল্পনা রাজ্য পুলিশ নিজেই করছে বলে সূত্রের খবর। স্টেশনের কাছে কোথায় কোথায় রাজ্য সরকারের জমি রয়েছেস, তা চিহ্নিত করতে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। জমি মিললেই রাজ্য নিজের খরচে জিআরপি থানাগুলি স্থানান্তরিত করবে বলে জানা গিয়েছে।