• সন্দেশখালি ট্রাক ধাক্কা কাণ্ডে গ্রেফতার তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য সহ ২
    বর্তমান | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: সন্দেশখালির বয়ারমারিতে ট্রাকের ‘ইচ্ছাকৃত’ ধাক্কা কাণ্ডে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল ন্যাজাট থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃতরা হল উত্তম সর্দার ও রুহুল কুদ্দুস তরফদার। ন্যাজাট থানার পুলিশ ভাঙড়ের পোলেরহাট এলাকা থেকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য উত্তম সর্দারকে গ্রেফতার করে। আর সরবেড়িয়া এলাকা থেকে পাকড়াও করা হয় রুহুল কুদ্দুস তরফদারকে।  শনিবার ধৃতদের বসিরহাট আদালতে তোলা হলে পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। তবে, এই ঘটনার মূল ‘কারিগর’ শেখ শাহজাহান ঘনিষ্ঠ আলিম মোল্লাকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। তবে, এখনও এই ঘটনায় অন্যান্য অভিযুক্তরাও অধরা। তবে, এক্ষেত্রে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে তদন্তকারীদের হাতে। সূত্রের দাবি, জেলবন্দি শাহজাহান হৃত সাম্রাজ্য ফিরে পেতে তৎপরতা বাড়িয়েছে। সেক্ষেত্রে ‘আড়কাঠি’ করা হয়েছিল জেলা পরিষদের সদস্য উত্তমকে। ফোনের কথোপকথন থেকে এই তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের কাছে।

    গত বুধবার কলকাতা বাসন্তী হাইওয়েতে ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হয় সিবিআইয়ের ‘সোর্স’ ভোলানাথ ঘোষের ছোট ছেলে সত্যজিৎ ও তাঁদের গাড়ি চালক শাহিনুর মোল্লার। অল্পের জন্য বেঁচে যান ভোলানাথবাবু। ২০২২ সালের একটি মামলায় সাক্ষ্য দিতে বসিরহাট আদালতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। ঘটনার পর ভোলানাথবাবু ন্যাজাট থানার অন্তর্গত রাজবাড়ি আউট পোস্টে আটজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে ন্যাজাট থানার পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, রুহুল কুদ্দুস তরফদার মোটর বাইকে চেপে ভোলানাথবাবুর গাড়িটি অনুসরণ করছিল। ভোলানাথবাবুদের অবস্থান মোবাইলের মাধ্যমে সে জানাচ্ছিল ঘাতক ট্রাকের আলিমল মোল্লা সহ অন্যান্যদের। মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ও কল করা নম্বরের তথ্যের সূত্র ধরেই রুহুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রুহুলের বাড়ি হাটগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শিমুলহাটি এলাকায়। সরবেড়িয়া এলাকায় নান্টু হাজি নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাড়া নিয়ে থাকত। রাজবাড়ি এলাকায় একটি মোবাইলের দোকানের কর্মী রুহুল শাহজাহান সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য। 

    এদিকে তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, শাহজাহান জেলে বসে তিনজনকে ‘নিকেশ’ করার নির্দেশ দেয় বিশ্বস্ত সৈনিকদের। প্রথম টার্গেট, ভোলানাথ ঘোষ। তাঁকে খতম করতে হবে ট্রাকের ধাক্কায়। তাঁকে শেষ করতে পারলেই জেলমুক্তি হতে পারে। কারণ ইডি’র উপর হামলার ঘটনায় কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে সাহায্য করছিলেন তিনি। তদন্তকারীরা আরও জেনেছেন, শাহজাহান বাহিনীর দ্বিতীয় টার্গেট, সন্দেশখালি-২ ব্লকের তৃণমূলের এক প্রভাবশালী নেতা। ধামাখালি ফেরিঘাটের কাছে তাঁকে গুলি করে খতমের প্ল্যান তৈরি হয়েছিল। ব্লকস্তরের আরেক নেতাও রয়েছে শাহজাহান বাহিনীর হিটলিস্টে। অভিযোগ, এক্ষেত্রে কাজে লাগানো হচ্ছিল উত্তমকে। গত সপ্তাহেই এই সমস্ত টার্গেট নিকেশে লাউখালি এলাকার গোপন ডেরায় বৈঠক করে শাহজাহান বাহিনী। পরপর তিন সপ্তাহে খতম করতে হবে গলার তিন কাঁটাকে। 
  • Link to this news (বর্তমান)