জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্য়ুরো: যুবভারতী কাণ্ডে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হাইকোর্টে। মোট ৩টে মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। মঙ্গলবার তার শুনানি। ফুটবলের রাজপুত্র মেসির কলকাতা সফর ঘিরে লন্ডভন্ড যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন। হাজার হাজার মূল্যের টিকিট কেটেও মেসিকে দেখতে না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন যুবভারতীর দর্শকরা। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ-এ মুহূর্তে বদলে যায় যুবভারতীর চেনা ছবিটা। ইভেন্ট ঘিরে চূড়ান্ত অব্যবস্থার দায়ে ঘটনার দিনই গ্রেফতার হয়েছেন আয়োজক শতদ্রু দত্ত। এবার জনস্বার্থ মামলাও দায়ের হল হাইকোর্টে।
'মেসি গোট ইন্ডিয়া ট্যুর' (GOAT India Tour 2025)- এর সূচনা হয়েছিল কলকাতা দিয়েই। ফুটবলের রাজপুত্রকে স্বাগত জানাতে প্রস্তু ছিল শহর, প্রস্তত ছিল তার অগনিত ভক্ত। কিন্তু ইভেন্টের শুরুতেই ছন্দপতন ঘটে। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন যেন হয়ে ওঠে যুদ্ধক্ষেত্র! বীভৎস সেই ছবি দেখেছে সারা রাজ্য থেকে দেশ, এমনকি সারা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমী মানুষ। বিশ্বজয়ী মেসির কদর করতে ব্যর্থ হয় কলকাতা। বিশ্বের দরবারে মুখ পোড়ে গোটা বাংলার।
এখন মেসি-দর্শনে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে এই বিপর্যয়কে ঘিরেই কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা। মোট ৩টি মামলা দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার মামলার শুনানি হবে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। ফলে মঙ্গলবারই যুবভারতীর বিপর্যয় প্রসঙ্গে আইনি প্রশ্নে আদালতের পর্যবেক্ষণ সামনে আসতে চলেছে। ওদিকে সরকারি সম্পত্তি ভাঙার অভিযোগেও পুলিসের তরফে দায়ের হয়েছে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা। সোমবার ২ যুবককে সোমবার গ্রেফতারও করেছে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিস। ধৃতদের নাম শুভ্রপ্রতিম দে এবং গৌরব বসু।
চড়া দামে টিকিট কেটে ফুটবলের রাজপুত্রকে দেখতে গিয়ে তাকেই দেখতে না পেয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখান উপস্থিত দর্শকেরা। শনিবার কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন। সেই ঘটনার তদন্তে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই সিট (SIT) গঠন করেছে। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করবে সিট। এমনটাই জানিয়েছে রাজ্য সরকার। এখন দেখার মঙ্গলবারের শুনানিতে যুবভারতী কাণ্ডে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কী বলেন।
প্রসঙ্গত, ঘটনার দিনই গ্রেফতার প্রধান আয়োজক শতদ্রু দত্ত। এখনও তিনি পুলিস হেফাজতেই রয়েছেন। পুলিস সূত্রে খবর, বেশকিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে তদন্তকারী অফিসাররা। যেমন- মোট কত টিকিট ছাপা হয়েছিল? কতগুলো ক্যাটাগরিতে টিকিট ছাপা হয়? কত সংখ্যক টিকিট বিক্রি করা হয়েছিল? মেসি যখন হোটেল থেকে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করবে, সেই সময় আশেপাশে কারা কারা থাকতে পারবে, সেই তালিকা কাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হয়েছিল? সেই তালিকার কপি কোথায়?
পুলিস আরও জানতে চায়, সাপ্লিমেন্টারি পাস কত পরিমাণে তৈরি করা হয়েছিল? সেই সাপ্লিমেন্টারি পাস কোন কোন ব্যক্তির কাছে কত পরিমাণ দেওয়া হয়েছিল? পুলিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল জলের বোতল কোনওভাবে ভিতরে প্রবেশ করবে না! তারপরেও জলের বোতল, কোল্ড ড্রিংকস এবং চিপস কী ভাবে স্টেডিয়ামের ভিতরে ঢুকেছিল? টেন্ডার কাদের কীভাবে দেওয়া হয়েছিল?
কারা কারা মেসির পাশে থাকবে সেটা কি আগে থেকে ঠিক করা হয়েছিল? যদি তা না হয়ে থাকে, তাহলে কী ভাবে তারা মেসির পাশে গেল? কে যাওয়ার পারমিশন দিল? মেসির আশেপাশের যাওয়া নিয়ে আগে থেকে কি আদৌ কোনও প্ল্যানিং করা হয়েছিল? প্ল্যানিং না থাকলে, কীভাবে এত মানুষ তাঁর কাছে পৌঁছাল? কারা থাকতে পারবে, তাদের নামের তালিকা কি তৈরি হয়েছিল? কোনও কি চাপ কাজ করেছিল?