• 'বিজয় দিবস ২০২৫' উদযাপন পূর্বাঞ্চল কমান্ডের
    আজকাল | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: পূর্বাঞ্চল কমান্ড সদর দপ্তর আগামী ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে ৫৪তম বিজয় দিবস উদযাপন করতে চলেছে। এই উপলক্ষে আয়োজিত সোমবার নানা কর্মসূচির অংশ হিসেবে কলকাতার বিজয় দুর্গে অবস্থিত মঙ্গল পাণ্ডে মিলিটারি ট্রেনিং এরিয়ায় একটি বর্ণাঢ্য সামরিক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। 

    অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিজোরামের রাজ্যপাল মাননীয় জেনারেল (ডাঃ) ভি কে সিং (অবসরপ্রাপ্ত), এবং পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়ামন্ত্রী এবং বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তাঁদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাম চন্দর তিওয়ারি (পিভিএসএম, ইউওয়াইএসএম, এভিএসএম, এসএম, জেনারেল অফিসার কমান্ডিং-ইন-চিফ, পূর্বাঞ্চল কমান্ড)-সহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সামরিক আধিকারিক, বেসামরিক প্রশাসনের প্রতিনিধি এবং বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ। সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত এই অনুষ্ঠানে কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকে বিপুল সংখ্যক দর্শকের সমাগম ঘটে।

    অনুষ্ঠানের সূচনা হয় সেনাবাহিনীর যুদ্ধ হেলিকপ্টারের চিত্তাকর্ষক ফ্লাই পাস্ট দিয়ে। এর পর সেনাবাহিনীর অশ্বারোহীদের দ্বারা পরিবেশিত মনোমুগ্ধকর টেন্ট পেগিং প্রদর্শনীতে ঘোড়া ও অশ্বারোহীদের অসাধারণ সমন্বয় ফুটে ওঠে। দর্শকরা প্রত্যক্ষ করেন ভারতীয় সেনার বিমানচালকদের রোমাঞ্চকর যুদ্ধকৌশল প্রদর্শনী। যেখানে নিখুঁত কর্মদক্ষতা ও যুদ্ধক্ষেত্রের চপলতা তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি মাইক্রোলাইট বিমান প্রদর্শনী এবং ড্রোনের ঝাঁক ও রোবট মিউল–এর মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পরিচয় দেওয়া হয়।

    অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যবাহী মাত্রা যোগ করে কলারি পায়াট্টু, ভাংড়া, গটকা ও জালারি ফাটক–এর পরিবেশন। যা দর্শকদের বিপুল প্রশংসা কুড়োয়। সেনাবাহিনীর ব্যান্ড সামরিক সঙ্গীত পরিবেশন করে। এ ছাড়াও আধুনিক অস্ত্র, সরঞ্জাম ও ড্রোনের বিস্তৃত প্রদর্শনীর মাধ্যমে অত্যাধুনিক সামরিক প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা হয়।

    জেনারেল ভি কে সিং এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল আর সি তিওয়ারি দর্শকদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। তাঁরা ভারত–বাংলাদেশ মৈত্রীর কথা তুলে ধরেন এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দ্বারা বাঙালিদের উপর সংঘটিত নৃশংসতার উল্লেখ করেন। পাশাপাশি ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস, দৃঢ়তা ও বীরত্বের কথা স্মরণ করান। যার ফলস্বরূপ পাকিস্তানি স্বৈরাচারীদের পরাজয় ঘটে এবং ৯৩,০০০ পাকিস্তানি সেনার আত্মসমর্পণের মাধ্যমে একটি স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়।

    এই অনুষ্ঠান কেবল একটি উদযাপনই নয়, বরং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর বীরত্ব, ত্যাগ ও অদম্য চেতনার প্রতি এক শ্রদ্ধার্ঘ্য এবং ভারত–বাংলাদেশ বন্ধুত্বের প্রতীক। ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সামরিক উৎকর্ষতার মাধ্যমে দর্শকদের সঙ্গে গভীর সংযোগ স্থাপন করে বিজয় দিবসের উত্তরাধিকারকে সম্মান জানানোই এই অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য।
  • Link to this news (আজকাল)