• ক্ষমতার প্রদর্শন? বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হতে পারবেন না মুখ্যমন্ত্রী! বিল ফেরালেন রাষ্ট্রপতি...
    ২৪ ঘন্টা | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: মুখ্যমন্ত্রী নন, এ রাজ্যের বিশ্ববিদ্য়ালয়গুলির আচার্য থাকছেন রাজ্যপালই। নবান্নের সংশোধনী প্রস্তাবে সম্মতি দিলেন না রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ফলে বিধানসভা সর্বসম্মতিতে পাস হলে গেলেও, বিল আপাতত কার্যতর করা যাচ্ছে না।

    এক্স হ্যান্ডেলে লোকভবনের তরফে পোস্ট দিয়ে জানানো হয়েছে, '২০.০৪.২০২৪ তারিখে  পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধনী) বিল, ২০২২  রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য সংরক্ষিত রেখেছিলেন রাজ্যপাল। ওই বিলের মাধ্যমে রাজ্য-সহায়তাপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের চ্যান্সেলর পদে রাজ্যপালের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীকে নিযুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। একই দিনে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধনী) বিল ২০২২,-ও রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়। ওই বিলেও আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আমির-ই-জামিয়া (চ্যান্সেলর) পদে রাজ্যপালের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়োগের প্রস্তাব ছিল। রাষ্ট্রপতি বিলে সম্মতি দেওয়া থেকে বিরত রয়েছেন'।

     

    চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছিল আগেই। লোকভবনের বাসিন্দা তখন জগদীপ ধনখড়। রাজ্যপালের বদলে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে বসানোর প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছিল রাজ্য মন্ত্রিসভা। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন, 'মন্ত্রিসভার বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গে যত বিশ্ববিদ্যালয় আছে, তার আচার্য পদে রাজ্যপালের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করতে চেয়ে বিধানসভায় বিল আনবে সরকার'।

    পদাধিকার বলে রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্য়ালয়ের আচার্য যেমন রাজ্য়পাল, তেমনি আবার নিয়ম অনুয়ায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিজিটর পদেও থাকবেন তিনিই। রাজ্যপালের বদলে ভিজিটার শিক্ষামন্ত্রীকে বসানোর প্রস্তাবে কিন্তু অনুমোদন দিয়েছিল রাজ্য মন্ত্রিসভা।  এখন এইন নিয়মে বদলে অবশ্য রাজ্যের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। কারণ, এটা নিয়ম, কোনও আইন নয়। ফলে রাজ্যপালের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না নবান্নকে।

    এদিকে রাজ্যের এই সিদ্ধান্তকে সরব হয়েছিল বিরোধীরা। বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা কটাক্ষ, 'নিজের মন্ত্রিসভাকে ব্যবহার করে ছোটবেলার শখ পূরণ করছেন মমতা'। তিনি বলেছিলেন, মাননীয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের অনুপ্রেরণায়  নিজেকে সাহিত্য অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারের যে ক্ষমতা, সেটাকে কীভাবে অপব্যবহার করতে হয়, সেটা খুব ভালোভাবে জানেন। ক্যাবিনেটের মাধ্যমে নিজের ছোটবেলার ইচ্ছা পূরণ করছেন'। আমার মনে হয়, কেন্দ্রের উচিত, UGC থেকে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যাগুলিতে যে ফান্ডিং আসে, সেটা নিয়ন্ত্রণ করা'।

    এদিকে আরজি কর কাণ্ডের পর যে ধর্ষণ বিরোধী যে অপরাজিতা বিল পাস হয়েছিল বিধানসভায়, সেই বিলটিও ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি দৌপদী মুর্মু। এই বিলে ধর্ষণে ফাঁসি কিংবা যাবজ্জীবনের কারাদণ্ডের প্রস্তাব দিয়েছিল রাজ্য় সরকার। শুধু তাই নয়, নির্যাতিতার মৃত্যু হলে, ফাঁসি সাজা বাধ্য়তামূলক করার কথাও বলা হয়েছিল বিলে। কিন্তু যেহেতু বিষয়টি স্পর্শকাতর, তাই বিলটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেন রাজ্যপাল।  রাজভবন সূত্রে খবর,  রাজ্যের প্রস্তাবিত ফাঁসি সাজা নিয়ে আপত্তি তুলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তাদের মতে, 'এক্ষেত্রে ফাঁসির সাজা কঠোর ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ'।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)