• পুরো টাকা আর দেবে না মোদি সরকার, নয়া আইনে বাংলার ঘাড়ে তিন হাজার কোটির বোঝা
    বর্তমান | ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • প্রীতেশ বসু, কলকাতা: আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও বাংলায় ‘১০০ দিনের কাজ’ চালু করা নিয়ে টালবাহানার শেষ নেই কেন্দ্রের। চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে একাধিক নতুন শর্ত, যা রাজ্যের জন্য ‘অসম্মানজনক’ বলে সুর সপ্তমে তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আবহে কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের নাম বদল করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না! তাদের প্রস্তাবিত আইন কার্যকর হলে রাজ্যের ঘাড়ে চাপবে বিপুল অঙ্কের আর্থিক বোঝা। এমনটাই দাবি রাজ্যের প্রশাসনিক মহলের। তারা জানাচ্ছে, নয়া আইন লাগু হলে বছরে একধাক্কায় প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার বোঝা চাপবে রাজ্যের ঘাড়ে। নিজস্ব কোষাগার থেকেই সেই টাকা মেটাতে হবে রাজ্যকে। সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে নবান্নের শীর্ষমহল রীতিমতো ক্ষুব্ধ।

    কিন্তু কেন্দ্রীয় এই প্রকল্পের জন্য হঠাৎ রাজ্যের কোষাগার থেকে খরচের প্রসঙ্গ আসছে কেন? আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, এতদিন ‘১০০ দিনের কাজ’-এর মজুরি বাবদ সম্পূর্ণ টাকাই দিত কেন্দ্র। কিন্তু প্রস্তাবিত নয়া আইন অনুযায়ী এই খরচের ৬০ শতাংশ টাকা দেবে কেন্দ্র। বাকি আর ৪০ শতাংশ টাকা দিতে হবে রাজ্যকেই। ফলে বিপুল চাপ পড়বে রাজ্যের কোষাগারে। সেক্ষেত্রে কত টাকা দিতে হবে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কোষাগার থেকে? যে সময় (২০২০-২১ এবং ২০২১-২২) রাজ্যের জবকার্ড হোল্ডাররা পুরোদমে ‘১০০ দিনের কাজ’ পাচ্ছিলেন, তখন কোনও বছর ৩৬ কোটি, কোনও বছর ৪১ কোটি শ্রম দিবস সৃষ্টি হয়েছে। সেই নিরিখে বছরে গড়ে ৪০ কোটি শ্রম দিবস তৈরি হবে ধরে নিয়ে হিসেব করলে দেখা যাচ্ছে, মজুরি বাবদ (নতুন হার দৈনিক ২৪০ টাকা) মোট খরচ হতে পারে ৭২০০ কোটি টাকা। তার ৪০ শতাংশ দিতে গেলে রাজ্যের কোষাগার থেকে বেরিয়ে যাবে প্রায় তিন হাজার কোটি (২৮৮০ কোটি) টাকা।

    রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘কেন্দ্র বলেছিল নয়া জিএসটি নীতিতে রাজ্যের আয় বাড়বে। বাস্তবে ঠিক তার উল্টো হচ্ছে। আবার রাজ্যের ন্যায্য প্রাপ্য দু’লক্ষ কোটি টাকা আটকে রেখেছে ওরা। এই পরিস্থিতিতে নয়া আইন এনে রাজ্যের উপর আর্থিক চাপ আরও বাড়ানোর উদ্যোগ সম্পূর্ণ জনবিরোধী পদক্ষেপ।’
  • Link to this news (বর্তমান)