• ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ নেই বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে, মৃতদেহ রেফার মালদহে
    বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বালুরঘাট: বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের চিকিৎসক কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। ফলে জটিল ময়নাতদন্ত নিয়ে সমস্যায় পড়েছে জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জটিল মৃত্যুর ক্ষেত্রে প্রায়দিনই রেফার করা হচ্ছে মৃতদেহ। ফলে ক্ষোভ বাড়ছে মৃতের পরিজনদের মধ্যে। সোমবারও কুশমণ্ডি ব্লকের এক মৃতদেহ বালুরঘাট জেলা হাসপাতাল থেকে মালদহে রেফার করা হয়েছে। ফলে দূর থেকে জেলা হাসপাতালে  এসে হয়রানির শিকার হচ্ছেন জেলার মানুষ। সকাল থেকে অপেক্ষা করে দুপুর আড়াইটা নাগাদ সাধারণ চিকিৎসক এসে জানিয়ে দেন, ওই মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হবে না। যা নিয়ে চিকিৎসকদের উপরে ক্ষোভ উগরে দেন মৃতের পরিজনরা। বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য ফরেন্সিক বিভাগের চিকিৎসক নেই। ফলে জটিল মৃত্যুর ময়নাতদন্ত করতে অনেক ডাক্তার রাজি হন না। তাই রেফার করা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। যাতে দ্রুত হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য একজন বিশেষজ্ঞ ফরেন্সিক চিকিৎসক দেওয়া হয়। 

    হাসপাতাল সূত্রে খবর, এদিন কুশমণ্ডির করঞ্জি এলাকা থেকে হাজেরা খাতুন (২৩) নামে এক বধূর দেহ আনা হয় ময়নাতদন্তের জন্য। রবিবার রাতে শ্বশুরবাড়িতে ওই বধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। অস্বাভাবিক সেই মৃত্যু নিয়ে ধন্দে পড়েছে মৃতের পরিজনরা। সেই দেহ বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের মর্গে আনা হলেও ময়নাতদন্ত করতে অস্বীকার করেন সাধারণ বিভাগের চিকিৎসকরা।মৃতের আত্মীয় ইয়াসিন আলি বলেন, আমরা আজ সকাল থেকে জেলা হাসপাতালে বসে রয়েছি। ডাক্তার আড়াইটার পর এসে জানাচ্ছেন, আজ আর ময়নাতদন্ত হবে না। আমরা অনেক অনুরোধ করলাম। কিন্তু ডাক্তাররা কেউ শুনলেন না। এখানে ময়নাতদন্ত না হলে তাঁরা আগেই বলে দিতে পারতেন। আমাদের হয়রানি হতো না। প্রসঙ্গত, বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের মর্গে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে তিনটি ময়নাতদন্ত হয়। কয়েক বছর ধরে হাসপাতালে ফরেন্সিক বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন না। ফলে এতদিন সাধারণ চিকিৎসকরা ময়নাতদন্ত করতেন এবং তার রিপোর্ট কয়েক দিনের মধ্যে দিয়ে দিতেন। গত জুন মাসে ফরেন্সিক বিভাগের চিকিৎসক এসেছিল। এরপর থেকে ওই চিকিৎসক রিপোর্ট দেওয়াতে গড়িমসি শুরু করছিলেন। একশোরও বেশি রিপোর্ট জমা হয়েছিল। তার পরেই নানা কারণে ওই চিকিৎসক হাসপাতালে কাজ ছেড়ে দেন। পরে কিছু রিপোর্ট দিলেও এখনও প্রায় ৫০ টি রিপোর্ট দেওয়া বাকি। ওই রিপোর্ট না পাওয়ায় জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষজন এসে ঘুরে যাচ্ছেন। কুশমণ্ডি এমনকী হরিরামপুর থেকেও মৃতের পরিজনরা ঘুরছেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়ায় সরকারি সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে পরিবারগুলি। এর মধ্যে আবার কিছু মৃতদেহ মালদহে রেফার করে দেওয়ায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন জেলাবাসী।  ফাইল চিত্র 
  • Link to this news (বর্তমান)