• নতুন তৈরি বাজারে ক্রেতাই নেই, বিক্রেতাও হাতে গোনা, বাবলারির গ্রামীণ হাটে বিপাকে ব্যবসায়ীরা
    বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: দীর্ঘদিনের দাবি মেনে প্রায় তিন বছর আগে পুরনো বাজারকে নতুনভাবে গড়ে তোলা হয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে বাবলারি পঞ্চায়েত লাগোয়া গ্রামীণ হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার দেখা মেলে না। বাজারে প্রায় ৩০ জন বিক্রেতার বসার ব্যবস্থা থাকলেও এখন দোকানদারি করছেন মাত্র চার জন। তার মধ্যে একজন সব্জি, দু’জন মাছ ও একজন মাংস নিয়ে বসছেন। অভিযোগ, বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এখানে কোনও বাজার আছে। একটা গোডাউন বলে ভুল হয়। নেই সাইকেল রাখার স্ট্যান্ড। অভিযোগ, বাজারটি চালুর পর থেকে সেটির প্রচারের ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন পঞ্চায়েত। 

    স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্ম নিশ্চয়তা প্রকল্পে ৮ শতক জায়গায় গ্রামীণ এই হাটটি তৈরি হয়েছে। বাবলারি পঞ্চায়েত লাগোয়া  বারোয়ারিতলায় হাটটি করতে প্রায় সাড়ে ২৬ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। চারিদিকে কংক্রিটের দেওয়াল এবং শক্তপোক্ত শেড দিয়ে তৈরি এই হাটে প্রায় ২৫- ৩০ জন ব্যবসায়ী বসতে পারেন। যদিও বসেন চারজন। উত্তর বাবলারির বাসিন্দা সব্জি বিক্রেতা বৃদ্ধ বাবলু ঘোষ বলেন, প্রায় ২৬ বছর ধরে সব্জির ব্যবসা করছি। এখানে পুরনো বাজার থাকার সময় থেকেই। এখন এক শ্রেণির বিক্রেতা পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ঘুরে সব্জি আর মাছ বিক্রি করছেন। বাড়ির কাছেই সবকিছু পেয়ে যাচ্ছে মানুষ।এজন্য এই বাজার জমছে না। আগে এখানে পুরনো বাজার ছিল, সেটা ভেঙে-চুরে গ্রামীণ হাট হল।আমি হাটের বাইরে সব্জি নিয়ে বসি। বাজারের ঘরগুলির মুখ রাস্তার দিকে করলে ভালো হতো। একেক দিন তো বউনিই হয় না।

    প্রাচীন মায়াপুরের প্রভাত মণ্ডল এই বাজারে মাছ বিক্রি করেন। তিনি বলেন, আমি ৩৫ বছর ধরে এখানে পুরনো বাজার থাকাকালীন সময় থেকেই মাছ বিক্রি করছি। প্রথমদিকে ভালোই বিক্রি হচ্ছিল। এখন বাড়ি বাড়ি ফেরি করে মাছ ও সব্জি বিক্রির দরুন বাজারটা খারাপ হয়ে গিয়েছে। অথচ এখানে বিক্রি বাড়লে পঞ্চায়েতের আয়ও হতো। খদ্দের না আসায় আমরাও ভুগছি।

    বাবলারির বাসিন্দা অসিতকুমার দে বলেন, আমার মনে হয় যাঁরা ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছেন তাদের সপ্তাহে একদিন বা দু’ দিন সেই  বাজারে বসানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে।শুধু প্রধানকে উদ্যোগী হলে হবে না, মাইকে প্রচার করতে হবে। এর আগেও পঞ্চায়েত থেকে মাইকে প্রচার ও মিটিং করা হয়েছে। সবাই এগিয়ে এলেই দীর্ঘ দিনের এই পুরনো বাজারটা রক্ষা করা সম্ভব হবে। স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে একটা মিটিং ডেকে কী করলে ভালো হয়, তা আলোচনা করে সেইমতো সিদ্ধান্ত নিতে হবে। 

    নবদ্বীপ বাবলারি পঞ্চায়েতের প্রধান নারায়ণ কর্মকার বলেন, ব্যবসায়ীরা বসলে তবে তো খদ্দের আসবে। পাড়ায় পাড়ায় যে মাছ,সব্জি বিক্রি হচ্ছে, এটা তো বন্ধ করা যায় না। আমরা চাইছি ব্যবসায়ীরাও বসুক, খদ্দেরও আসুক। এই বাজার নিয়ে প্রচার, এই বাজারটি কীভাবে উন্নত  করা যায় সেই বিষয় নিয়ে আমরা ভাবনাচিন্তা চালাচ্ছি।
  • Link to this news (বর্তমান)