সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: ফরাক্কার এনটিপিসি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কেন্দুয়া অ্যাশপন্ড সংলগ্ন এলাকায় এক ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। রবিবার রাতের ঘটনায় ফরাক্কার কেন্দুয়ায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। মৃতের নাম আলম শেখ(৪৬)। তাঁর বাড়ি ফরাক্কা থানার জোড়পুকুড়িয়া গ্রামে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জঙ্গিপুরে মহকুমা হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, তিনি ফরাক্কা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা হাসনারা খাতুনের দেওর। অ্যাশপন্ড এলাকায় রাত প্রহরীর কাজ করছিলেন। কয়েকজন দুষ্কৃতী ধারালো অস্ত্র ও পিস্তল নিয়ে আচমকাই তাঁর উপর হামলা চালায়। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে বেনিয়াগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। ফরাক্কার এসডিপিও শেখ সামসুদ্দিন বলেন, মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জঙ্গিপুরে মহকুমা হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
ফরাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলাম বলেন, নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোলের এই ঘটনা। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। কী ঘটেছে, পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখুক।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফরাক্কা এনটিপিসি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অ্যাশপন্ডের ছাই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সিন্ডিকেট রাজ চলছে। অ্যাশপন্ডের দখল নিয়ে প্রায়শই গণ্ডগোল বাধে। এলাকা কার নিয়ন্ত্রণে থাকবে, তা নিয়ে মাঝেমধ্যে এলাকা উত্তপ্ত হয়। ঘটনার রাতে আলম এক সঙ্গীকে নিয়ে কেন্দুয়া অ্যাশপন্ড পাহারা দিচ্ছিল। এমন সময় জনা সাতেকের দুষ্কৃতী দল সেখানে হামলা চালায়। তাদের প্রত্যেকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র ছিল। দুষ্কৃতীরা ওই ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপায়। গলা, মুখে একাধিক বার ধারালো অস্ত্রে কোপ দেয়। পেট কেটে দেয়। ঘটনাস্থলেই তিনি লুটিয়ে পড়েন। তারপর তিন রাউন্ড গুলি চালায় বলে মৃতের পরিবারের লোকজনের দাবি। ভয়ে ছুটে পালিয়ে যান তাঁর সঙ্গী। তিনিই মারধরের খবর আলমের পরিবারের সদস্যদের দেন। পরিবারের লোকজন তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
মৃতের দাদা নবি শেখ বলেন, ভাই ১২ বছর ধরে এনটিপিসির অ্যাশপন্ডের পাইপ দেখভালের জন্য নাইট গার্ড হিসেবে কাজ করে। রাতে কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁকে ধারালো অস্ত্র ও পিস্তল নিয়ে হামলা করে। কেন এ হামলা, আমরা বুঝে উঠতে পারছি না। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখুক।
ফরাক্কা এনটিপিসি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের এইচওএইচআর অলোককুমার রণবীর বলেন, অ্যাশপন্ডে আমাদের কোনও কর্মী থাকে না। ঘটনার সঙ্গে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোনও সম্পর্ক নেই।