• মুরারইয়ে হাত দিয়ে টানলেই উঠে যাচ্ছে পিচ, নিম্নমানের কাজের অভিযোগ, দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারের সামনেই তুমুল বিক্ষোভ
    বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: হাত দিয়ে টানলেই উঠে আসছে পিচ। রাস্তার দু’দিক বসে যাচ্ছে। মুরারইয়ের পলশার রূপরামপুর থেকে হরিশপুর গ্রাম পর্যন্ত রাস্তার মান নিয়ে এমনই নানা অভিযোগ উঠছে। সোমবার সকালে পূর্তদপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের সামনেই হাত দিয়ে পিচ তুলে তুমুল বিক্ষোভ শুরু করেন এলাকার বাসিন্দারা। পরে গ্রামবাসীরা বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। ঘটনায় জড়িয়েছে রাজনীতিও। রাস্তার ঠিকাদার এলাকার প্রভাবশালী দুই তৃণমূল নেতার দাদা বলে অভিযোগ। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুরারই-১ ব্লকের রূপরামপুর থেকে হরিশপুর গ্রাম পর্যন্ত সাড়ে ১১কিলোমিটার রাস্তা তৈরির জন্য রাজ্য সরকার সাড়ে ১১কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। কিছুদিন আগেই রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করেন ঠিকাদার। প্রথম পর্যায়ের কাজ, সাইড ফিলিং শেষ হয়েছে অনেক আগেই। বর্তমানে জানকিনগর থেকে হরিশপুর পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তার উপর পিচে দেওয়ার কাজ চলছে। অভিযোগ, এত কোটি টাকার কাজ হলেও কোনও শিডিউল টাঙানো হয়নি। রাতের অন্ধকারে চলছে কাজ। রবিবার রাতে শিবরামপুর গ্রামের রাস্তায় পিচ দেওয়া হয়। সোমবার সকালে পূর্তদপ্তরের এক জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার সেখানে আসেন। গ্রামবাসীরা তাঁর সামনেই হাত দিয়ে রাস্তার পিচ তুলে তুমুল বিক্ষোভ শুরু করেন। যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।  এলাকার বাসিন্দা নইমুদ্দিন খান বলেন, রাতের অন্ধকারে নিম্নমানের কাজ চলছে। কোনও শিডিউলও টাঙানো হয়নি। এমন কাজ হয়েছে যে হাতেই পিচ উঠে যাচ্ছে। জনগণের করের টাকা এভাবে নয়ছয় করা চলবে না। প্রতিবাদে শামিল হয়েছি আমরা। গ্রামবাসীরা বলেন, ঠিকাদারের দুই ভাই এলাকার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা। তাই কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করে নিম্নমানের রাস্তা করা হচ্ছে। এনিয়ে বহুবার ঠিকাদারকে বলা সত্ত্বেও কর্ণপাত করেননি। আমরা চাই, সঠিকভাবে রাস্তার কাজ হোক। এলাকার বিজেপি নেতা হেমন্ত ঘোষ বলেন, শাসকদল কাটমানি নিচ্ছে। রাস্তা যে মানের হওয়া উচিত তেমনই হচ্ছে। মুরারই-১ ব্লকের সর্বত্রই শিডিউল না টাঙিয়ে রাতের অন্ধকারে রাস্তার কাজ করা হচ্ছে। দ্রুত রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। ঠিকাদার মোস্তফা খান বলেন, রবিবার কাজ সারতে রাত হয়ে গিয়েছিল। শেষের দিকে দু’গাড়ি খারাপ সামগ্রী শ্রমিকরা বিছিয়ে দিয়েছিল। এদিন সকালে কিছু লোকজন জড়ো হয়ে তা তুলে দেয়। ওই দুই গাড়ি দিয়ে যতদূর কাজ হয়েছে পুরোটাই তুলে দিয়ে ফের করে দেব। শিডিউল টাঙানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধানকে শিডিউল দিয়েছি। মানুষ সব জানে।  

    উল্লেখ্য, এর আগেও নলহাটির গোপালপুরে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরির অভিযোগ উঠেছিল ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। এব্যাপারে পূর্তদপ্তরের(সড়ক) এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অভিজিৎ বড়াই বলেন, রবিবার ১৫গাড়ি সামগ্রীর কাজ হয়েছে। তারমধ্যে দেড় গাড়ি খারাপ ছিল। এদিন সকালে দপ্তরের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ায় সেই লেয়ার তুলে ফেলতে গিয়েছিলেন। তখনই এলাকার মানুষ ঝামেলার সৃষ্টি করেন। পরে পুরোটাই তুলে নতুন করে লেয়ার দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।  মুরারইয়ের শিবরামপুর গ্রামের কাছে এভাবে হাতেই উঠে যাচ্ছে রাস্তার পিচ।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)