• বাংলাদেশ থেকে এসে স্থানীয়কে বাবা দেখিয়ে ভোটার লিস্টে নাম, বয়সের ফারাক ধরিয়ে দিল দুই ভাইকে
    বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: বাবা ও ছেলের বয়সের ফারাক মাত্র পাঁচ বছর! এমনই আজব ঘটনা দেখা গেল মঙ্গলকোটের শীতলগ্রামে। না, বাস্তবে নয়, ভোটার তালিকায়। অন্যজনকে ‘বাবা’ সাজিয়ে ভোটার লিস্টে নাম তুলেছেন বাংলাদেশ থেকে আসা দুই ভাই। তাতেই এই বিপত্তি। এসআইআরের কল্যাণে ঘটনার পর্দাফাঁস হয়। কাটোয়ার মহকুমা শাসক অনির্বাণ বোস বলছেন, আমাদের সন্দেহ হতেই আমরা তদন্ত করেছিলাম। ওদের ‘নো-লিঙ্কেজ’ দেখানো হয়েছে। শুনানিতে ডাকা হবে। 

    মঙ্গলকোটের শীতলগ্রামে ১৭৫ নম্বর বুথে ৪৩৫ নম্বরে নাম রয়েছে লক্ষ্মী মাঝির। তাঁর বয়স লেখা রয়েছে ৫৯ বছর। আর ৪৩৭ নম্বরে নাম রয়েছে তাঁর ভাই সাগর মাঝির। তাঁর বয়স লেখা রয়েছে ৫৮ বছর। এদের দু’ জনের বাবা হিসেবে ৪৩৪ নম্বরে নাম রয়েছে সরোজ মাঝির। তাঁর বয়স রয়েছে ৬৩ বছর। অর্থাৎ পিতা-পুত্রের বয়সের ফারাক মাত্র চার ও  পাঁচ বছর। ইনিউমারেশন ফর্ম জমা হতেই আজব ঘটনা চোখে পড়ে সংশ্লিষ্ট বিএলওর। এমনকী দুই ভাইয়ের যথেষ্ট বয়স হলেও ২০০২ সালের তালিকায় তাঁদের নাম নেই। এতেই প্রশাসনের সন্দেহ হয় এবং তদন্তে পর্দাফাঁস হয়। 

    জানা গিয়েছে, লক্ষ্মী মাঝি ও সাগর মাঝি নামে দুই ভাই বাইশ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে এপার বাংলায় আসেন। প্রথমে তাঁরা মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে এসে ওঠেন। সেখানে তাঁরা আধার কার্ড, রেশন কার্ড তৈরি করেন। কিন্তু ভোটার তালিকায় নাম তুলতে সেখান থেকে ২০০৬ সালে মঙ্গলকোটের শিতলগ্রামে এসে ওঠেন। তারপর এখানে সরোজ মাঝিকে বাবা দেখিয়ে তাঁরা ভোটার তালিকায় নাম তোলেন। কিন্তু পিতা-পুত্রের বয়সের ফারাকই তাঁদের চালাকি ধরিয়ে দেয়। 

    লক্ষ্মী ও সাগর মাঝি জানান, আমরা বাংলাদেশ থেকে এসেছিলাম এদেশে। সিপিএমের আমলে মুর্শিদাবাদ থেকে কাজের খোঁজে মঙ্গলকোটে চলে আসি। এখানেও আমরা দিনমজুরি করে সংসার চালাই। এখন প্রশাসন যা সিদ্ধান্ত নেবে, তাই মানতে হবে আমাদের। সরোজ মাঝি বলছেন, আমার দুই ছেলে। বড় ছেলের নাম অনুপ মাঝি আর ছোটো ছেলের নাম সুজিত। কীভাবে ভোটার তালিকায় আমার চার ছেলে দেখানো হল, তা বুঝতে পারছি না। সাগর মাঝির স্ত্রী লিপিকা মাঝি বলছেন, ওঁকে আমরা শ্বশুরমশাই পাতিয়ে ছিলাম। আমার শ্বশুরমশাইয়ের নাম রামপদ মাঝি। তিনি বাংলাদেশে থাকতেন। 

    এদিকে এই ঘটনায় সিপিএম-তৃণমূল তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে। সিপিএমের এরিয়া কমিটির প্রাক্তন সদস্য রামবিকাশ বটব্যাল বলেন, যারা এসব করেছিল তারাই ভালো বলতে পারবে। মঙ্গলকোটের তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী বলেন, সিপিএম ভোট র বাড়ানোর জন্যই বাংলাদেশ থেকে আসা লোকজনদের তালিকায় নাম তুলেছিল। এখন নেতারা সাধু সাজছে।  শীতলগ্রামে বৃদ্ধ সরোজ মাঝিকে ভুয়ো বাবা দেখিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন বাংলাদেশি দুই ভাই।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)