পৌষমেলায় টোটোর জুলুম রোধে কঠোর পুরসভা, নির্দিষ্ট হল ভাড়া, স্টল বুকিং শুরু, পুরনো ব্যবসায়ীদের অগ্রাধিকার
বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বোলপুর: সামনেই ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা। প্রতি বছরই দেশ-বিদেশ থেকে শান্তিনিকেতনে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। কিন্তু, মেলায় আসা পর্যটকদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, উৎসবের মরশুম এলেই শহরে টোটোচালকদের একাংশ ইচ্ছেমতো ভাড়া হাঁকায়। পর্যটকদের এই হয়রানি রুখতে টোটোর ভাড়া বেঁধে দেওয়া হল। মাথাপিছু প্রতি কিলোমিটার ১৫টাকা করে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এর চেয়ে বেশি ভাড়া চাইলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবারই পৌষমেলা সংক্রান্ত বৈঠক হয় বোলপুর পুরসভায়। পুলিশ, প্রশাসন এবং পুর প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন বোলপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পর্ণা ঘোষ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বোলপুর) রানা মুখোপাধ্যায়, এসডিপিও রিকি আগারওয়াল, বোলপুর থানার আইসি এবং শান্তিনিকেতন থানার ওসি থেকে শুরু করে মহকুমা শাসকের প্রতিনিধিও। চেয়ারম্যান বলেন, লক্ষাধিক পর্যটকের সমাগম হবে বোলপুরে। কীভাবে যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে, সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মানুষ যাতে সুষ্ঠুভাবে মেলা উপভোগ করতে পারে তারজন্য সবরকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি টোটোর জুলুমবাজির মুখে যাতে কাউকে পড়তে না হয় সেব্যাপারেও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
সূত্রের খবর, যানজট এড়াতে টোটো চলাচলের রুটেও রাশ টানা হয়েছে। শহরের সব রাস্তায় অবাধে টোটো চলাচল করতে পারবে না। পুলিশ ও পুরসভার তরফে নির্দিষ্ট রুটম্যাপ তৈরি করা হচ্ছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, গতবার যে সমস্ত রুটে নো-এন্ট্রি ছিল এবারেও তাই থাকছে। সঙ্গীত ভবন, রয়েল বেঙ্গল হোটেল এবং জনতা ফার্মেসির কাছে নো-এন্ট্রি থাকছে। তবে, নো-এন্ট্রি পয়েন্টে দু’তিনটি টোটো থাকবে। যাতে বয়স্ক মানুষজনের যাতায়াতে অসুবিধায় না হয়। তাছাড়া, বেশ কয়েকটি জায়গায় টোটোস্ট্যান্ড থাকবে।
এদিনের বৈঠকে টোটো ইউনিয়নের প্রতিনিধিও ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেই টোটোর রেট চার্ট বেঁধে দেওয়া হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, মেলার কারণে আগামী ২৩-২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত টোটোর ভাড়া বেঁধে দেওয়া হয়েছে। মাথাপিছু কিলোমিটার প্রতি ১৫ টাকার বেশি ভাড়া নেওয়া যাবে না। টোটোর এই রেটচার্ট টোটোস্ট্যান্ড সহ শহরের কমপক্ষে ১০টি জায়গায় টাঙিয়ে দেওয়া হবে। সেখানে হেল্পলাইন নম্বরও থাকবে। অতিরিক্ত ভাড়ার দাবি করলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সর্বসম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
সোমবার থেকে মেলার স্টল বুকিংও শুরু হয়ে গিয়েছে। যাঁরা ২০২৪ সালে স্টল নিয়েছিলেন, এবছর তাঁদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর পুরনো ব্যবসায়ীরা স্টল বুক করতে পারবেন। গতবারের ব্যবসায়ীদের বুকিংয়ের পর যে সমস্ত স্টল পড়ে থাকবে তা ১৭ ডিসেম্বর থেকে সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে। যদিও পুরনো ব্যবসায়ীরা বুকিংয়ের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যায় পড়ছেন বলে দাবি ব্যবসায়ী সমিতির। সম্পাদক সুনীল সিং বলেন, অনলাইনে স্টল বুক করতে কিছু সমস্যা হচ্ছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সমাধানের আশ্বাস মিলেছে।