• হাতির হানায় ফসল নষ্টের অভিযোগে বনকর্মীদের আক্রমণ
    বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: হাতির হানায় ফসল নষ্টের অভিযোগ তুলে বনকর্মীদের উপর চড়াও হয় এলাকার বাসিন্দারা। বুধবার রাতে বেলিয়াতোড়ে ওই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। ঘটনায় সাত বনকর্মী জখম হয়েছেন বলে আধিকারিকরা জানিয়েছেন। বেলিয়াতোড়ের রেঞ্জারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম অর্পণ মণ্ডল, রাজকুমার ভুঁই ও অভিজিৎ ঘোষ। তাদের বাড়ি বেলিয়াতোড়ের কদমা গ্রামে। বাঁকুড়া জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মীকে মারধর, কাজে বাধা সহ অন্যান্য ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। সোমবার ধৃতদের বাঁকুড়া জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক চারদিনের বিচারবিভাগীয় হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।  বাঁকুড়া উত্তরের ডিএফও জে শেখ ফরিদ বলেন, বর্তমানে মাঠে ফসল তেমন নেই। আমন ধান ওঠার পর আমরা হাতিগুলিকে দলমার দিকে পাঠানোর চেষ্টা করছি। তা সত্ত্বেও বাসিন্দারা বনকর্মীদের উপর চড়াও হয়েছে। স্থানীয়দের মারে সাতজন জখম হয়েছেন। তাঁদের বেলিয়াতোড় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা করাতে হয়েছে। এর আগে সোনামুখী ও পাত্রসায়রেও একই ঘটনা ঘটেছিল। সেবার তিনজন গ্রেফতার হয়েছিল। বনকর্মীদের উপর আক্রমণের ঘটনা মেনে নেওয়া যাবে না। 

    পুলিশ, বনদপ্তর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগের বড়জোড়া, সরাগোড়া, রাধানগর এলাকায় বেশকিছু হাতি রয়েছে। হাতিগুলি একাধিক দলে ভাগ হয়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন বড়জোড়ার জঙ্গলে থাকার পর হাতিগুলি পাঞ্চেত ও মেদিনীপুর হয়ে দলমায় ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। হাতির পাল যাতে যত্রতত্র ছড়িয়ে না পড়ে তারজন্য বনকর্মীরা সেগুলির উপর নজর রাখছেন। দপ্তরের কর্মী-আধিকারিকরা লোকালয় ও ফসলের খেত বাঁচিয়ে হাতিগুলিকে নির্দিষ্ট করিডর ধরে এগিয়ে দিচ্ছেন। তারই মাঝে শাবকদের জন্য হাতির দল মাঝেমধ্যে বিশ্রাম নিচ্ছে। ওইসময় হাতিগুলি উদরপূর্তির জন্য লাগোয়া এলাকায় ফসলের খেতে হানা দিচ্ছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। 

    বর্তমানে আমন ধান সেভাবে মাঠে না থাকলেও বড়জোড়া, বেলিয়াতোড়, সোনামুখীতে ব্যাপক রবি ফসলের চাষ হয়েছে। হাতির পায়ের চাপে সরষে, আলুর ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। হাতির হানা থেকে ফসল বাঁচানোর জন্য বনকর্মীদের কাছে বাসিন্দারা বারবার দাবি জানাচ্ছেন। তা নিয়ে বচসাও হচ্ছে। রবিবার রাতেও প্রথমে বাসিন্দাদের সঙ্গে বনকর্মীদের বচসা হয়। তারপর মারধরের ঘটনা ঘটে। ডিএফও বলেন, সোমবার ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা চাষিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। হাতির হামলার পরপরই আমরা ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দিচ্ছি। 

     ধৃতদের  বাঁকু‌ড়া জেলা আদালতে তোলা হচ্ছে।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)