নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এসআইআর পর্বে জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্রের ‘ডুপ্লিকেট’ কপি সংগ্রহের জন্য আবেদনের হিড়িক পড়ে গিয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ‘স্লট বুকিং’-এর মাধ্যমে আবেদন গ্রহণের সংখ্যা বাড়িয়েছে পুরসভা। সেই সঙ্গে বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় দ্বিগুণ হারে শংসাপত্র ইস্যু করা হচ্ছে এখন। তারপরেও জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্রের কপি পেতে আবেদনের পাহাড় জমছে পুরসভায়। পরিস্থিতি এমন যে, হাঁফ ছাড়তে পারছেন না পুর-স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী-আধিকারিকরা। হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। কতদিন এভাবে চলবে, তা ভেবেই চিন্তা বাড়ছে পুরকর্তাদের।
জন্ম ও মৃত্যুর শংসাপত্রের কপি পেতে এখন হোয়াটসঅ্যাপে (বট) আবেদন করা যায়। সেখানে প্রতি স্লটে দৈনিক আবেদন নেওয়ার সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগে যেখানে সব স্লট মিলিয়ে ১৫২ জনের আবেদন নেওয়া হত, প্রথমে তা বাড়িয়ে ২৪০ করা হয়। তারপরও পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারায় এখন প্রতি স্লটে তা ৩০০ করা হয়েছে। অর্থাৎ, প্রতিদিন হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ৩০০ জন শংসাপত্রের কপির জন্য আবেদন করতে পারছেন। হোয়াটসঅ্যাপেই জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, নথিপত্র নিয়ে কখন তাঁদের পুরসভার কার্যালয়ে হাজির হতে হবে। পুর স্বাস্থ্যবিভাগ সূত্রে খবর, এর বাইরেও প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০টি আবেদন জমা নিতে হচ্ছে। গত দু’সপ্তাহের হিসেব ধরলে পাঁচ হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। আবেদনের গ্রহণের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শংসাপত্র ইস্যু। পুরসভার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘আগে স্বাভাবিক সময়ে দিনে ১০০টি করে শংসাপত্র ইস্যু করা হতো। এখন সেটাই হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ হারে। কতদিন এভাবে চলবে, তা বোঝা যাচ্ছে না।’ তিনি আরও জানান, শনিবার যেখানে চারটি স্লটে আবেদন নেওয়ার কথা, সেখানে পাঁচ-ছ’টি স্লট করতে হচ্ছে। তার উপর রয়েছে অফলাইনে আবেদন। এছাড়া, পুলিশের তরফে ভেরিফিকেশনের জন্য রোজ ১৫০ থেকে ২০০ আবেদন আসছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যে পুরসভার অন্যান্য বিভাগ থেকে ১৩ জন কর্মীকে স্বাস্থ্য বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে। খোলা হয়েছে নতুন ডেস্ক। কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, পুরসভার ২০ নম্বর রুমে ১৮ জন, ১৭ নম্বর রুমে তিনজন, ৪০ নম্বর রুমে ছ’জন এবং সিংহদুয়ারে (২ নম্বর গেট) আট জন কর্মী পরিষেবা দিচ্ছেন। এই অবস্থায় আধিকারিকদের একাংশের আশঙ্কা, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর সার্টিফিকেটের কপি নিতে হুড়োহুড়ি আরও বাড়তে পারে। তবে কেউ কেউ আশা করছেন, শংসাপত্রের কপি যাঁদের প্রয়োজন ছিল, তাঁরা ইতিমধ্যেই তা সংগ্রহ করে নিয়েছেন। ফলে খসড়া তালিকা প্রকাশের পর ততটা চাপ নাও থাকতে পারে।