• কাউন্সিলার খুনের নেপথ্যে কে? দিনভর চর্চা চলল আগরপাড়ায়
    বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি,  বরানগর: জনপ্রিয় কাউন্সিলার অনুপম দত্তকে নৃশংস হত্যাকাণ্ডে আলোড়ন পড়েছিল পানিহাটিতে। সোমবার তিনি অভিযুক্ত দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর সন্ধ্যায় আসামিদের সর্বোচ্চ সাজার দাবি জানিয়ে আগরপাড়ায় মোমবাতি মিছিল করেন বাসিন্দারা। পাড়ার জটলা থেকে চায়ের দোকান— সর্বত্রই একটাই প্রশ্ন, অনুপম দত্তকে খুনের নেপথ্যে কে? আদৌ কি পুলিশ সেইসব প্রভাবশালীর টিকি ছুঁতে পারবে? কারণ, এদিনও দোষী সাব্যস্ত হওয়া সঞ্জীব ওরফে বাপি পণ্ডিত দাবি করেছে, তাদের ফাঁসানো হয়েছে। পিছনে রাজনৈতিক মাথারা রয়েছে। নিহত কাউন্সিলারের স্ত্রীও এদিন বলেছেন, আমিও মহামান্য আদালতের কাছে আসামির বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টিপাত করতে অনুরোধ করব। 

    ২০২২ সালের মার্চ মাসে পুরভোট হয়। কাউন্সিলাররা তখনও শপথ নেননি। ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় খুন হন পানিহাটি পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার অনুপম দত্ত। ঘটনার দিন থেকেই এলাকাবাসীর অভিযোগ, অনুপমবাবুর হত্যাকাণ্ডের পিছনে রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা। ঘটনার তিন বছর পরও সেই প্রভাবশালীদের হদিশ পায়নি পুলিশ। এদিন আগরপাড়ার বিভিন্ন মোড়ে চর্চার বিষয় একটাই, অনুপমবাবুর মৃত্যুর পিছনে আসলে কে? প্রভাবশালীদের কি বাঁচিয়ে দেওয়া হল? বাপি পণ্ডিত পানিহাটি পুরসভার ঠিকাদার ছিল। শুধু ঠিকাদার নয়, শাসকদলের ঘনিষ্ঠ ছিল বলে দাবি স্থানীয়দের। সেকারণে, অন্যান্য ঠিকাদারদের লক্ষ লক্ষ টাকা বকেয়া থাকলেও খুনের ঘটনার আগে তার সব বকেয়া মিটিয়ে দিয়েছিল পুরসভা। শুধু তাই নয়, বাপি পণ্ডিত দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগে সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিল। হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের আইনি লড়াইয়ে বিপুল খরচ সে জেলে বসে কীভাবে জোগাড় করল, কে বা কারা টাকার জোগান দিল, এই প্রশ্নই বড়ো হয়ে দেখা দিয়েছে এদিন। এদিন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার মীনাক্ষী দত্ত মেয়েকে নিয়েই পথ হাঁটেন আগরপাড়ায়। তিনি আসামিদের সর্বোচ্চ সাজার দাবি জানান। আগরপাড়া স্টেশন থেকে বিটি রোডের তেঁতুলতলা মোড় পর্যন্ত মোমবাতি মিছিলে ঢল নামে মানুষের। মীনাক্ষীদেবী বলেন, বাপি জামিন পেতে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে লক্ষ লক্ষ টাকা উড়িয়েছে। কোর্টে একেকদিন চার-পাঁচ জন করে নামী আইনজীবীকে দাঁড় করিয়েছে। কেউ বা কারা টাকার জোগান না দিলে, এ জিনিস হতে পারে না। তিনি বলেছেন, এই ঘটনার পিছনে বড়ো রাজনৈতিক নেতারা আছেন। তাদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমার স্বামীর আত্মা শান্তি পাবে না। আমি চাই আদালত, এই বিষয়েও নজর দেবে। খুনের ব্লু-প্রিন্ট যাদের তৈরি, তারা এখনও বিচার প্রক্রিয়ার বাইরে রয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)