• ‘রাতেই যুবভারতীতে জল ও খাবার’ পুলিশি মন্তব্যে নজরদারি নিয়েই প্রশ্ন, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ‘দুঃসাহস’ কার নির্দেশে? তলব আয়োজক ম্যানেজার সহ ৬ জনকে
    বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পুলিশি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও যুবভারতী স্টেডিয়ামের ভিতরে জল-প্যাকেটজাত খাবারের স্টল। ১০ গুণ দামে দেদার চলেছে বিক্রি-বাটা। কীভাবে পুলিশি নজরদারি এড়িয়ে এই অব্যবস্থা? তাতে আদতে পুলিশি গাফিলতির দিকেই আঙুল তুলছে গোটা নেটদুনিয়া।

    অভিযোগের জবাবে সোমবার সাফাই দিল বিধাননগর পুলিশ। সোমবার কমিশনারেটের তরফে জানানো হয়েছে, অনুষ্ঠানের দিন সকাল ৭টা বেজে ২০ মিনিটে পুলিশ স্টেডিয়ামের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ৮টায় গেট খোলা হয়েছে। এরপর থেকেই দর্শকদের টিকিট স্ক্যানিং শুরু হয়। কমিশনারেটের দাবি, পুলিশ স্টেডিয়ামে আসার আগেই ভিতরে জল ও খাবার ঢুকে যায়। রাতের অন্ধকারে যুবভারতীর র‌্যাম্পে তৈরি হয়েছে স্টল। ভোররাতের মধ্যেই জলের বোতল ও প্যাকেটজাত খাবার পৌঁছে যায় সেখানে। কিন্তু, অনুষ্ঠানের আগের দিন মাঝরাতে পুলিশি নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে স্টেডিয়ামে জলের বোতল, খাবার ঢুকল কীভাবে? তাহলে কি পুলিশি নিরাপত্তা ছিল না? নাকি এর নেপথ্যে রয়েছেন কোনও প্রভাবশালী? যার প্রভাবের ঠেলায় পুলিশের মুখ খোলার জো ছিল না! যদিও এহেন প্রশ্নের কোনও জবাব বিধাননগর কমিশনারেটের কাছে নেই। 

    না দেখতে পাওয়ার দর্শক ক্ষোভে ঘি ঢেলেছে নির্ধারিত সময়ের আগে যুবভারতী ছেড়ে মেসির প্রস্থান। হতাশ গ্যালারি থেকে উড়ে আসে একের পর এক জলের বোতল। কিন্তু, শহরের মেগা ইভেন্টের চারদিন আগে থেকেই বিধাননগর পুলিশ সোশ্যাল মিডিয়ায় সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, মাঠে কোনও জলের বোতল আনা যাবে না। নিষেধাজ্ঞা ছিল প্যাকেটজাত খাবারেও। শুধু তাই নয়, অনুষ্ঠানের একদিন আগে মূল আয়োজক শতদ্রু দত্তের ম্যানেজার লাল্টু দাসের সঙ্গে একান্ত বৈঠক সারেন কমিশনারেটের পদস্থ আধিকারিকরা। নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি মনে করিয়ে দেয় পুলিশ। কিন্তু, নির্ধারিত দিনে একেবারে উলাটপুরাণ। যাবতীয় পুলিশি নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে স্টেডিয়ামের র‌্যাম্পে রীতিমত স্টল তৈরি করে বিক্রি হল জল। ২০ টাকার বোতলের দাম ২০০ টাকা। ১০ টাকার চিপস বিক্রি হয়েছে ১০ গুণ দামে। মেসি-ইভেন্টে হাজির থাকা এক জল বিক্রেতা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, ‘টেন্ডার নিয়ে জল যোগান দিয়েছি। প্রচুর টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই ঘটনার পর তো আর টাকাও পাব না।’

    তদন্তকারী আধিকারিক সূত্রে খবর, মেসি ইভেন্ট নিয়ে হোটেলে পুলিশের সঙ্গে আলোচনায় স্থির হওয়া কর্মসূচি লঙ্ঘন করেছে আয়োজক সংস্থা। মাঠে এলোমেলো ভাবে মেসির ঘোরাঘুরির কোন‌ও কথাই ছিল না। মাঠে মেসি প্রবেশের সময় সর্বোচ্চ ৩৫-৪০ জন উপস্থিত থাকার কথা ছিল, তা মানা হয়নি। মাঠে নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির সঙ্গেই ফটোগ্রাফি সেশনের কথা ছিল, তাও লঙ্ঘন হয়। কর্মসূচির গাইডলাইন লঙ্ঘনের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লাল্টু দাস সহ আয়োজক সংস্থার ছ’জনকে নোটিশ পাঠিয়ে তলব করেছে বিধাননগর পুলিশ। নোটিশে বলা হয়েছে, আজ, মঙ্গলবারের মধ্যে তাঁদের তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করতে হবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)