আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রী: বিলে মিলল না রাষ্ট্রপতির সম্মতি
বর্তমান | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাজ্য সরকারের সহায়তাপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে থাকবেন রাজ্যপাল। ওই পদে মুখ্যমন্ত্রীকে আনার বিষয়ে সম্মতি দিলেন না রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সোমবার এই বিষয়টি রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছে।
২০২২ সালের ১৩ জুন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় পাস হয় ‘দি ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি ল’স অ্যামেন্ডমেন্ট বিল ২০২২’। যে বিলে রাজ্য সরকারের তরফে উল্লেখ করা হয়, যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান, তাই সরকারি সহায়তাপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে প্রশাসনিক কাজে গতি আনতে এবং উচ্চশিক্ষার প্রসারে আরও সুবিধার জন্য আচার্য পদে রাজ্যপালের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীকে করা হোক। বিধানসভায় পাস হওয়ার পর ওই বিলটি ২০২২ সালের ১৫ জুন পাঠানো হয় রাজভবনে। রাজ্যপাল ওই বিলটি পর্যালোচনা করেন। তারপর ওই বিল ২০২৪ সালের ২০ এপ্রিল রাজভবন পাঠায় রাষ্ট্রপতি ভবনে। তারপর ওই বিলটি রাষ্ট্রপতি খতিয়ে দেখেন। এরপর ওই বিল সম্পর্কে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বার্তা এসেছে রাজভবনে। সোমবার রাজভবনের সচিবালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ওই বিলের সম্মতি প্রদান থেকে বিরত হয়েছেন। রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস পদাধিকারবলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হবেন।
এছাড়াও ‘দি ওয়েস্টবেঙ্গল ইউনিভার্সিটি হেলথ সায়েন্স আমেন্ডমেন্ড বিল ২০২২’ এবং আলিয়া ইউনিভার্সিটি আমেন্ডমেন্ট বিল ২০২২’ বিধানসভায় পাস হয়েছিল ২০২২ সালের জুন মাসে। এই দু’টি বিলেও উল্লেখ করা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে রাজ্যপালের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত করা হোক। এই দু’টি বিলও রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়েছিল। সবক্ষেত্রেই রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বার্তা পাঠানো হয়েছে। তাতে রাজভবনের বক্তব্য, আচার্য পদে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস যে কাজ করছেন বা দায়িত্ব পালন করছেন, সেটাই অব্যাহত রাখবেন। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কেন বিলটি ফেরত এসেছে তা রাজ্য সরকার পর্যালোচনা করে দেখবে। এক্ষেত্রে অন্য রাজ্যের বিষয় দেখতে হবে। বাংলার প্রতি কোনও আঘাত কি না, দেখতে হবে সেটাও।
বিশেষত, রাজভবনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের ‘ঠান্ডা লড়াই’ অনেকদিন ধরেই চলছে। জগদীপ ধনকারের সময় থেকে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন বিষয়ে রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের মতের অমিল ঘটেছে। বর্তমান রাজ্যপালের সময়কালেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজভবনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই আঙুল তুলেছেন রাজ্যের শাসক দলের জনপ্রতিনিধিরা। আবার রাজ্য সরকারের কাজ নিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। এই অবস্থায় আচার্য পদের বিল সংক্রান্ত বিষয়ে যে তথ্য সামনে এসেছে, তাতে ‘ঠান্ডা লড়াই’ আগামী দিনে কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই দেখার। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে যে বিল ফেরত এসেছে, তা নিয়ে সরকার পক্ষ এখন আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। তবে তৃণমূলের তরফে অনেকদিন ধরেই বলা হচ্ছে, রাজভবনকে বিজেপি পার্টি অফিসে পরিণত করেছে।