অয়ন ঘোষাল: SIR সেমিফাইনালের দিন সাতসকালে মৃত মানুষেরা ধরা দিলেন জি ২৪ ঘণ্টার ক্যামেরায়। শুধু ধরা দিলেন না। বাইট দিলেন। কাউকে দেখা গেল বাড়ির কাজকর্ম করতে। কাউকে দেখা গেল বল খেলতে। যদিও কমিশনের চোখে এরা সবাই মৃত। BLO বাড়িতে এসে এমনটাই বলে গেছেন। ফর্ম দেননি। ফলে প্রত্যাশিতভাবেই আজ প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় খাস কলকাতার নিউ আলিপুরে বাদ পড়েছেন এরকম ২৩ জন মৃত ভোটার।
কলকাতা পুরসভার ১১৮ নম্বর ওয়ার্ড। ১০১ নম্বর পার্ট। রায় বাহাদুর রোড। পরিবারের কর্তা নবকুমার পাল ২০২১ সালের ৩০ মার্চ বয়সের কারণে মারা গেছেন। তাঁর স্ত্রী অন্নুপূর্ণা পাল। বয়স ৭২। সকালে দিব্যি বাড়ির কাজকর্ম করছেন। অথচ বাড়িতে BLO এসে প্রথম দিনই জানিয়ে গেছিলেন, কমিশনের তালিকায় নব কুমার পাল এবং অন্নপূর্ণা পাল দুজনেই মৃত। আশ্চর্য ব্যাপার। কারণ ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তিনি ভোট দিয়েছেন। তাকে এইভাবে কমিশন মেরে ফেলল কোন যুক্তিতে? অতএব বেঁচে বর্তে থাকা অন্নপূর্ণা পাল নিজের মৃত্যু সংবাদে বিচলিত হয়ে পড়েছেন।
কলকাতা পুরসভার ১১৮ নম্বর ওয়ার্ড। পার্ট ৬৯। নিউ আলিপুর স্টেট ব্যাঙ্কের পাশের বাড়ির বাসিন্দা ৩৮ বছরের শুকদেব রূপ রায়। বাড়ির সামনে বল নিয়ে খেলছেন। তিনি মানুষ না ভূত? প্রশ্ন করতেই হেসে ফেললেন। কারণ বাড়িতে BLO এসে জানিয়ে গেছেন তিনি মৃত। তাই প্রত্যাশিতভাবেই তার নামও আজ বাদ চলে গেল খসড়া ভোটার তালিকা থেকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল শুকদেব বাবুর মা পঞ্চবালা পাল ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে প্রয়াত। মায়ের নাম জীবিত হিসেবে ছিল BLO তালিকায়। জলজ্যান্ত জোয়ান ছেলের নাম বাদ চলে গেল আজ।
১১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারক সিং জানাচ্ছেন তার ওয়ার্ডের বিভিন্ন পার্টে এরকম জলজ্যান্ত মোট ২৩ জনের নাম মৃত হিসেবে আজ বাদ পড়ে গেল। আবার BLO বাড়িতে এসে ইনিউম্যারেশন ফর্ম দিয়ে যাওয়ার পর এবং তা ফিলাপ করে জমা দেওয়ার পরেও আরও ১৭ জনের নাম নট ফাইন্ড বলে বাদ চলে গেছে।