• ১১০ বছরের ঠাকুমার শেষযাত্রায় ফাটলো বাজি, বাজল তাসা
    এই সময় | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • শতায়ু ছিলেন ঠাকুমা। ১০০ বছর পার করে আরও ১০ বছর পরিবারের সঙ্গে থেকেছেন। তাঁর চলে যাওয়ায় এক দিকে যেমন কষ্ট পেয়েছেন নাতি নাতনিরা, তেমনই এতগুলো বছরে তাঁর সঙ্গে পরিবারের যে মধুর আদুরে স্মৃতি তৈরি হয়েছে, তা উদযাপন করাও উচিত বলেই মনে করেছেন তাঁরা। ১১০ বছরের বৃদ্ধার শেষযাত্রায় তাই ধামসা, মাদল, তাসাপার্টির সঙ্গে দেদার বাজির রোশনাইও দেখা গেল। স্মৃতির আনন্দ অশ্রু আর স্বজন বিয়োগের জল কোথাও যেন মিলে মিশে একাকার। মঙ্গলবার সে দৃশ্যের সাক্ষী থাকল বীরভূমের সাঁইথিয়া শহর।

    বছর চারেক শয্যাশায়ী থাকার পরে সোমবার সাঁইথিয়া ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বেহুলা পাড়ার লিনন মুদির মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি, তাঁর বয়স ১১০ বছর। বছর চারেক আগে একমাত্র ছেলে তিনকড়ির মৃত্যু হয়। বৌমা, এক নাতি, ৫ নাতনি-সহ জনা কুড়ি পরিবারের সদস্য। মঙ্গলবার সকালে নাতি, নাতজামাই এবং প্রতিবেশীরা রীতিমতো জমকালো শোভাযাত্রা করে তাঁর মৃতদেহ ময়ূরাক্ষী নদী লাগোয়া জালিবাগান শ্মশানে নিয়ে যান।

    শেষকৃত্যের পরে একই ভাবে শোভাযাত্রা করে ফিরে আসেন। বৃদ্ধার নাতি সেন্টু মুদি, নাতনি কলি মুদি, দুলি মুদি, নাতজামাই কৈলাস সর্দাররা বলেন, ‘উনি ১০০ বছরের বেশি আমাদের সঙ্গে ছিলেন। ছেলে, মেয়ের বিয়ে তো বটেই, নাতি-নাতনিদের বিয়েও দেখেছেন।’

    স্থানীয় কাউন্সিলার অশোক দাস বলেন, ‘ওই মহিলা পাড়ার মধ্যে সব থেকে বয়স্ক ছিলেন। তবে এমন শোভাযাত্রা সহকারে শ্মশানযাত্রা এর আগে দেখিনি।’ যদিও এ ভাবে শেষযাত্রার সমালোচনাও করেন অনেকেই। লোকসংস্কৃতি গবেষক আদিত্য মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘এখন কিছু মানুষের এই ধরনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সাধারণত খুব বয়স্ক কিম্বা শয্যাশায়ী কেউ মারা গেলে এ ভাবে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা কাম্য নয়। যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক।’

  • Link to this news (এই সময়)