গর্জে উঠলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করার কোনও চক্রান্ত মেনে নেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন তিনি। এই প্রশ্ন উঠছে কেন? সম্প্রতি প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে এই বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য ভেসে এসেছে। সোমবার তারই কড়া জবাব দিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন এক সাংবাদিক সম্মেলনে হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, ‘গত এক বছর ধরে বাংলাদেশের একাংশ থেকে বারবার এই ধরনের মন্তব্য ভেসে আসছে। এটা ভারতের সার্বভৌমত্বের জন্য বিপজ্জনক। উত্তর-পূর্ব ভারতকে বিচ্ছিন্ন করে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত করার যে উদ্ভট স্বপ্ন কেউ কেউ দেখছেন, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং অবাস্তব।’
তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ভারত এখন বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। সেই সঙ্গে ভারত একটি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র। তাই ভারতের অখণ্ডতা নিয়ে ছিনিমিনি খেলার সাহস যেন কেউ না দেখায়। হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, ‘বাংলাদেশ কী ভাবে এমন ধৃষ্টতা দেখায়? ভারতের মানুষ কিন্তু এ সব চুপচাপ মেনে নেবে না।’
এই ঘটনার সূত্রপাত ১৫ ডিসেম্বর। হাসনাত আবদুল্লা নামে বাংলাদেশের নবগঠিত রাজনৈতিক দল, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ বা NCP-র এক নেতা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে নিয়ে এক চরম বিতর্কিত মন্তব্য করেন।
তিনি দাবি করেন, ভারত যদি বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার চেষ্টা করে, তবে প্রয়োজনে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিকে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন বা ‘আইসোলেট’ করার কথা ভাবতে পারে বাংলাদেশ। এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই সোমবার ক্ষোভ উগরে দেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী।
হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানান, এই ধরনের মানসিকতাকে প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ‘বাংলাদেশের মানুষকে এটা বুঝতে হবে। এমন আচরণের সামনে ভারত নীরব দর্শক হয়ে থাকবে না।’
এর আগেও শিলিগুড়ি করিডর বা ‘চিকেন’স নেক’ নিয়ে কড়া ভাষায় বাংলাদেশকে সতর্ক করেছিলেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বা কোনও অন্য কোনও রাষ্ট্র চিকেন’স নেক দখল করলেই ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্ব ভারত বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এই চিকেন'স নেকই কেটে দেওয়ার হুমকি এসেছিল পদ্মাপার থেকে।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ যদি ভারতের এই স্থানে আঘাত হানে, তবে বাংলাদেশের দুই সংবেদনশীল ‘চিকেন’স নেক’-এ পাল্টা আঘাত করবে ভারতও। তাঁর মতে, মেঘালয় সংলগ্ন বাংলাদেশের করিডরটি ভারতের চিকেন’স নেক-এর থেকেও সরু ও অরক্ষিত।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রসঙ্গ টেনে ঢাকাকে তিনি ভারতের সামরিক শক্তির কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। হিমন্তের সাফ কথা, ‘ভারতের মতো বড় শক্তির মোকাবিলা করতে হলে বাংলাদেশকে ১৪ বার জন্মাতে হবে।’