কাকদ্বীপের ট্রলারে ধাক্কা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজের, উদ্ধার ১১, নিখোঁজ ৫
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫
উদ্ধার হওয়া ১১ জন মৎস্যজীবীকে এদিন সকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানার নারায়ণপুর ঘাটে নিয়ে আসা হয়। ঘাটে পা রাখলেও তাঁদের আতঙ্ক কাটেনি। সমুদ্রে মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ার অভিজ্ঞতা মনে পড়তেই কেঁপে উঠছেন অনেকে। চোখে-মুখে স্পষ্ট আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তা। এরই মধ্যে তাঁদের বাকি পাঁচ সঙ্গী কোথায়, তাঁরা আদৌ বেঁচে আছেন কি না, সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মনে।
উদ্ধার হওয়া ওই মৎস্যজীবীদের ইতিমধ্যেই প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয়েছে। শারীরিক আঘাতের পাশাপাশি অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। ঘাটে ভিড় জমিয়েছেন নিখোঁজ মৎস্যজীবীদের পরিবারের সদস্যরা। প্রিয়জনের কোনও খোঁজ না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তাঁরা। উপকূলরক্ষী বাহিনীর কাছে একটাই আর্তি, যেভাবেই হোক তাঁদের খুঁজে বের করা হোক।
উপকূলরক্ষী বাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের যে এলাকায় ট্রলারটি ডুবে গিয়েছে বলে অনুমান, সেই বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ট্রলারটি জলের নিচে কোথায় রয়েছে, তা চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। নিখোঁজ মৎস্যজীবীরা ঢেউয়ের স্রোতে ভেসে গিয়েছেন, না কি ডুবে যাওয়া ট্রলারের মধ্যেই আটকে রয়েছেন, এই সমস্ত সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী রবিবার কাকদ্বীপ থেকে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে বেরিয়েছিল ‘এফ বি পারমিতা–১১’ নামের ওই ট্রলারটি। সোমবার ভোর প্রায় পাঁচটা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। সেই সময় ভারত ও বাংলাদেশের জলসীমা সংলগ্ন এলাকায় ঘন কুয়াশা এবং আধো অন্ধকার ছিল বলে দাবি করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, সেই পরিস্থিতিতেই বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজটি আচমকা ট্রলারে ধাক্কা মারে।
জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় ওই ট্রলারের মালিকের আর একটি ট্রলার কাছাকাছিই ছিল। দুর্ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গে সেটি এগিয়ে এসে সমুদ্রে ভাসতে থাকা মৎস্যজীবীদের উদ্ধার করে। পরে খবর পেয়ে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে তল্লাশি ও উদ্ধারকাজে নামে।
ভারতীয় জলসীমায় বিদেশি নৌজাহাজের এই ধরনের ঘটনায় নতুন করে সীমান্ত সুরক্ষা ও মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে নিখোঁজ পাঁচ মৎস্যজীবীর ভাগ্যে কী আছে, তার উত্তর এখনও অজানা। তবে তাঁদের জীবিত উদ্ধারের আশাতেই সমুদ্রজুড়ে টানা তল্লাশি চালানো হচ্ছে।