মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা চাওয়ার পরও এত প্রশ্ন? মেসি কাণ্ডে বিজেপিকে কুম্ভ-দিল্লির পদপিষ্টের ঘটনা মনে করালেন অভিষেক
প্রতিদিন | ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মেসির সফরে যুবভারতীর বিশৃঙ্খলা নিয়ে এবার মুখ খুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রশ্ন, ঘটনার এক ঘণ্টার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা চেয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তারপরও কেন এত প্রশ্ন? বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে পদপিষ্ট হয়ে এত মানুষ মারা যাওয়ার পরও তো প্রশ্ন তোলা হয় না।
যুবভারতী প্রসঙ্গে অভিষেকের বক্তব্য, “যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে যা হয়েছে তার এক ঘণ্টার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা চেয়েছেন। ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে পুলিশকর্তা থেকে শুরু করে মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে। তারপরেও আমাদের কেন বারবার প্রশ্নের মুখে দাঁড়াতে হচ্ছে?” যুবভারতীর বিশৃঙ্খলার পর রাজ্যের সদর্থক ভূমিকার প্রশংসা করেন অভিষেক। তিনি বলেন, “খোদ মুখ্যমন্ত্রী মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। এটাই তাঁর দায়বদ্ধতা এবং সামর্থ্যের প্রতীক। তিনি ঝুঁকতেও জানেন। একটা ঘটনা ঘটেছে, তারপর রাজ্যের তরফে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
বিজেপিকে নিশানা করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলছেন, “কুম্ভ মেলায় যখন বহু মানুষের মৃত্যু হয় তখন তো কেউ প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায় না প্রধানমন্ত্রীকে বা যোগী আদিত্যনাথকে? তদন্ত তো দূরের কথা। ন্যূনতম ক্ষমা পর্যন্ত কেউ চায় না। তখন তো যোগী আদিত্যনাথ বা সুকান্ত মজুমদারদের প্রশ্নের মুখে দাঁড় করানো হয় না।”
উল্লেখ্য, ১৩ ডিসেম্বর ‘গোট ট্যুরে’ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আসেন লিওনেল মেসি। সঙ্গে ছিলেন লুইস সুয়ারেজ ও রড্রিগো ডি পল। কিন্তু হাজার হাজার টাকা দিয়েও দর্শকরা মেসিকে দেখতে পারেননি বলে অভিযোগ। আর্জেন্টাইন মহাতারকা মাঠ ছাড়তেই গ্যালারি থেকে বোতল ছোড়া হয়, ভেঙে ফেলা হয় ব্যানার। তারপর ব্যারিকেড ভেঙে মাঠে ঢুকে রীতিমতো তাণ্ডব চালায় উন্মত্ত জনতা। মেসির সঙ্গে যুবভারতীতে ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তিনি ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন। মেসি ও দর্শকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন মুখ্যমন্ত্রী। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায়ের নেতৃত্বে সেই কমিটি অতি তৎপরতার সঙ্গে কাজ করে শুরু দিয়েছে। যুবভারতীতে ভাঙচুরের ঘটনায় প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে একগুচ্ছ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করেছে রাজ্য। তদন্ত কমিটির সুপারিশ মেনে সিট গঠন করা হয়েছে। শোকজ করা হয়েছে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে। সেই সঙ্গে শোকজ করা হয়েছে বিধাননগরের কমিশনার মুকেশ কুমার, যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তরের সচিব রাজেশ কুমার সিনহাকে। সাসপেন্ড করা হয়েছে বিধানগরের ডিসি অনীশ সরকারকে। বরখাস্ত করা হয়েছে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সিইও দেবকুমার নন্দনকেও। অভিষেক মনে করছেন, রাজ্যের সব পদক্ষেপ ইতিবাচক। এরপর আর প্রশ্নের অবকাশ থাকে না।