লখনউ: ঝাড়খণ্ড থেকে অভাবী দুঃস্থ মহিলাদের দিল্লিতে কাজ দেওয়ার টোপে এনে অশালীন ভিডিও তৈরির চক্র। গত ১ ডিসেম্বর এক পচাগলা কঙ্কালসার দেহ উদ্ধারের তদন্তে নেমে এমনই তথ্য উদঘাটন করল উত্তরপ্রদেশের বিশেষ তদন্তকারী দল। এই ঘটনায় হাপুর জেলার বাসিন্দা এক দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া সেই দেহ ঝাড়খণ্ডের সোনিয়া নামে এক মহিলার। তাঁকে ধর্ষণের পর ভিডিও রেকর্ড করে ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছিল। পুলিশে যাওয়ার হুমকি দিতেই তাঁকে খুন করে যুবক। দেহ লোপাটে সাহায্য করে তার স্ত্রী।
হাড়হিম এই ঘটনাটি অবশ্য গত আগস্টের। মাস তিনেক পর দেহ উদ্ধার ঘিরে তদন্তে নেমে সাফল্য পেল পুলিশ। কী হয়েছিল আগস্টে? পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দম্পতির নাম অঙ্কিত কুমার ও কালিস্তা ওরফে কালী। কালী আদতে সিমদেগার বাসিন্দা। সে রাজ্যের দুঃস্থ মহিলাদের পরিচারিকার কাজের টোপে দিল্লিতে আনার দায়িত্ব ছিল তার কাঁধেই। গত আগস্ট মাসে সোনিয়াকে দিল্লিতে নিয়ে আসে কালী। তাঁর উপর যৌন নির্যাতন চালায় অঙ্কিত। গোটা ঘটনার ভিডিও রেকর্ড করে। ২৭ আগস্ট রাতে সোনিয়া পুলিশের কাছে যাওয়ার হুমকি দিলে অঙ্কিত ও কালী তাঁকে বেধড়ক লাঠিপেটা করে। মারধরে তাঁর মৃত্যু হলে প্রথমে সেই দেহ পারফিউম স্প্রে করে ঘরেই দু’দিন লুকিয়ে রাখে দম্পতি। পরে ২৯ আগস্ট রাতে স্যুটকেসে দেহ ভরে তারা অটোরিকশ ভাড়া করে ৯ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে সেটি ফেলে আসে। তারপর দিল্লি ছেড়ে পালায়। ১ ডিসেম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ঝোপ থেকে সোনিয়ার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্ত শুরু হলে সম্প্রতি দিল্লির বিবেক নগর এলাকা থেকে এক মহিলা পরিচারিকা পুলিশকে সোনিয়ার নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ করেন। তিনি এও জানান, খুনের ব্যাপারে সবই জানেন। এমনকী অঙ্কিত তাঁকেও ধর্ষণ করেছে। এবং ভিডিও রেকর্ড করে ব্ল্যাকমেল করছে।
এই তথ্য পেয়েই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিনীত ভটনাগরের নেতৃত্বে তদন্তকারী দল উত্তরপ্রদেশের হাপুরে হানা দেয়। অভিযুক্ত দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়। যে লাঠি দিয়ে সোনিয়াকে মেরে খুন করা হয়েছিল সেটাও উদ্ধার হয়েছে। চক্রের সঙ্গে আর কারা যুক্ত তা জানার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।