• নির্বাচনি সংস্কার নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে মোদি সরকার
    বর্তমান | ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • দিব্যেন্দু বিশ্বাস, নয়াদিল্লি: নির্বাচনি সংস্কার নিয়ে আলোচনায় অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে লোকসভায় থ্রি-ডি নীতি আউড়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ‘ডিটেক্ট’, ‘ডিলিট’, ‘ডিপোর্ট’। অর্থাৎ, প্রথমে চিহ্নিত করো। তারপর নাম বাদ দাও। শেষে নিজের দেশে ফেরৎ পাঠাও। মঙ্গলবার রাজ্যসভায় নির্বাচনি সংস্কার নিয়ে আলোচনায় অমিত শাহের পাল্টা থ্রি-ডি পলিসির উল্লেখ করল তৃণমূল কংগ্রেস। ‘ডিভাইড’, ‘ডিস্ট্র্যাক্ট’, ‘ডিফ্লেক্ট’। উল্লিখিত ইস্যুতে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তুলোধোনা করে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বললেন, সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি করে বিজেপি আদতে বাংলাকে ভাগ করতে চাইছে। ধর্ম এবং ভাষার ভিত্তিতে বিভেদ তৈরি করতে চাইছে। বাংলায় কথা বললেই আমি এখন বাংলাদেশি। ডেরেকের তোপ, নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে চাইছে বিজেপি সরকার। তাই সাধারণ মানুষের নজর ঘোরানোর চেষ্টা চলছে। অনুপ্রবেশ যদি হয়, তাহলে এর দায় কার? এর দায় একমাত্র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। এদিন রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ বলেন, ২০১১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলায় বারবার মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। বাংলার ভোটে তৃণমূল নয়, মানুষ জিতেছে। তাই আমাদের কথাও শুনুন। এদিক ওদিক থেকে এত মন্তব্য করবেন না। 

    মঙ্গলবার রাজ্যসভায় নির্বাচনি সংস্কার নিয়ে আলোচনায় মৃত বিএলওদের ‘শহিদ’ হিসেবেও উল্লেখ করেন ডেরেক। তাঁদের জন্য শোক পালনে কয়েক সেকেন্ড নীরবতা পালনের অনুমতিও চান। যদিও সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ তা দেননি। তবে এই সময় উপস্থিত তৃণমূল সাংসদদের প্রত্যেকেই নিজের আসনে দাঁড়িয়েছিলেন। উল্লেখ্য, এদিন সংসদের উচ্চকক্ষে নির্বাচনি সংস্কার নিয়ে আলোচনায় একটি বড় অংশ জুড়ে ছিল বাংলাই। আলোচনার শেষ বক্তা হিসেবে রাজ্যসভার নেতা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডা টেনে আনেন বাংলার প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, বাংলার ন’টি সীমান্তবর্তী জেলায় ভোটারের সংখ্যা সবথেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। উত্তর দিনাজপুরে এই বৃদ্ধির হার ১০০ শতাংশেরও বেশি। মালদহ, মুর্শিদাবাদ, ২৪ পরগনা, জলপাইগুড়ির জেলাতেও বৃদ্ধির হার লক্ষ্যণীয়। এই রাজ্যে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের ভোটও বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় সাড়ে সাত শতাংশ। রাজ্যের সার্বিক ভোটারও প্রায় তিন কোটি বৃদ্ধি পেয়েছে। নাড্ডার প্রশ্ন, এদের ডিটেক্ট, ডিলিট এবং প্রয়োজনে ডিপোর্ট করা কি নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না? নির্বাচনি সংস্কার নিয়ে আলোচনায় নিজের ভাষণে রাজ্যসভায় এদিন কংগ্রেসের কড়া সমালোচনা করেছেন নাড্ডা। তিনি বলেছেন, এসআইআর কোনও নতুন প্রক্রিয়া নয়। ১৯৫২ সাল থেকেই তা হচ্ছে। শুধুমাত্র ২০০২ সালের এসআইআর বাদ দিলে অন্যান্য বছরে কংগ্রেস আমলেই তা হয়েছে। তাহলে এখন আপত্তি কীসের? ইভিএমও রাজীব গান্ধীর আমলে এসেছে। নির্বাচনে ভালো ফল না করলেই সব দায় কমিশনের ঘাড়ে ঠেলে আদতে ক্যাডারদের শান্ত করার চেষ্টা করছে বিরোধীরা। নির্বাচনি সংস্কার নিয়ে কোনও স্মারকলিপি কমিশনকে কংগ্রেস দেয়নি। শুধু কোনও কোনও কংগ্রেস নেতা অ্যাটম বোমা, হাইড্রোজেন বোমা ফেলার কথা বলছেন। যদিও দু’টি বোমার তথ্যেই বিস্তর গরমিল রয়েছে। কবে যে নিউক্লিয়ার বোমা ফেলবেন কে জানে!
  • Link to this news (বর্তমান)