• দেহব্যবসায় সিন্ডিকেট! বারাসত জেলা পুলিশের হাতে এল দালালদের তালিকা
    বর্তমান | ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: কাজের টোপ দিয়ে এখনও অনেক অল্পবয়সিকে দেহব্যবসা করানো হচ্ছে। চক্র সক্রিয় রেখেছে সাত থেকে আটজন ব্রোকার। সেই তালিকা বারাসত জেলা পুলিশের হাতে। তাদের ধরতে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। পাশাপাশি স্ক্যানারে চক্রের ‘মাস্টারমাইন্ড’ও। বারাসতে স্পা কাণ্ডের তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য তদন্তকারীদের হাতে।  

    মধ্যমগ্রামের একটি আয়া সেন্টার চালান আশুতোষ দে এবং স্ত্রী আনিসা দে। আড়ালে দম্পতি নাবালিকা-তরুণীদের কাজের টোপ দিয়ে হোটেল ও স্পা সেন্টারে দেহ ব্যবসায় নামাত। নিম্নবিত্ত পরিবারের কম বয়সি মেয়েরাই ছিল ‘টার্গেট’। কলকাতা থেকে শহরতলিতে চক্রে কিছু দালালও রয়েছে। তারা নিজেদের মধ্যে সিন্ডিকেট চালিয়ে হোটেল ও স্পা সেন্টারে মহিলা ‘সাপ্লাই’ দিত। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কাজের টোপ দিত দম্পতি। সোশ্যাল মিডিয়ায় গ্রুপ খুলে চলছিল কারবার।  

    পুলিশ তদন্তে জানতে পারে, সেপ্টেম্বর মাসে অশোকনগর থেকে এক নাবালিকা ও ২০ বছরের তরুণী নিখোঁজ হয়। কিছুদিন পর তরুণী ফিরে আসে বাড়ি। পুলিশ নিয়ম মেনে তাকে থানায় ডেকে জেরা করতেই চক্রের সন্ধান পায়। এরপর আয়া সেন্টারের মালিক আশুতোষ দে ও আনিসাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, অশোকনগরের নাবালিকাকে যাদবপুরের বাসিন্দা বাপি কর্মকার ওরফে রাহুলের কাছে পাচার করা হয়েছে। তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে জানায়, নাবালিকা পালিয়ে রহড়ার এক আত্মীয়ের বাড়িতে আছে। ৯ ডিসেম্বর রহড়া থেকে উদ্ধার করা হয় নাবালিকাকে। প্রত্যেকের বয়ান রেকর্ড করার পর রবিবার বারাসতের কাজিপাড়ার স্পা সেন্টারে হানা দিয়ে চক্রের পর্দা ফাঁস করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে সেন্টারে ম্যানেজার ইসলাম দর্জি ও চক্রের দালাল নিতু সিংকে। অধরা সেন্টারের মালিক। 

    উদ্ধার হওয়া নাবালিকা বলছে, বান্ধবীর মাধ্যমে কাজের জন্য নিতু সিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। আমাকে তার বাড়িতে রেখে দেহ ব্যবসা চালাত। পরে পাঠানো হয় যাদবপুরের বাপি কর্মকারের কাছে। সেখান রহড়ার এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে আসি। পরে পুলিশ উদ্ধার করে। উদ্ধার হওয়া তরুণী বলে, পরিচিতের মাধ্যমে মধ্যমগ্রামের আয়া সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। কাজের প্রলোভন দেখিয়ে দেহ ব্যবসায় নামায়। কাজ করিয়েও আমাকে টাকা দেয়নি। বারাসত পুলিশ জেলার সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খড়িয়া বলেন, ‘সিন্ডিকেটে সাত থেকে আট দালালের নাম পেয়েছি। তাদের গ্রেফতার করা হবে। এখনও কয়েকজন নাবালিকা কাজে যুক্ত। তাদের উদ্ধার করা লক্ষ্য। পাশাপাশি কাজিপাড়ার স্পা সেন্টারের পলাতক মালিককে ধরতে তদন্ত চলছে।’  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)