ইথানল কারখানা বিরোধী বিক্ষোভ ঘিরে রণক্ষেত্র রাজস্থানের হনুমানগড়, আক্রান্ত কংগ্রেস বিধায়ক
বর্তমান | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
জয়পুর: ইথানল কারখানাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের জের। বুধবার রণক্ষেত্রের চেহারা নিল রাজস্থানের হনুমানগড়। পুলিশের লাঠিচার্জ-কাঁদানে গ্যাস পরিস্থিতি আরও ঘোরালো করে তোলে। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা এক ডজনের বেশি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন। তাঁদের ক্ষোভের আগুন থেকে বাদ যায়নি পুলিশের জিপও। ঘটনায় জখম হয়েছেন প্রায় ৫০ জন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন বেশ কয়েকজন মহিলা। মাথায় আঘাত পান কংগ্রেস বিধায়ক অভিমন্যু পুনিয়া। জেলা হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে। ঘটনার জেরে স্কুল, কলেজ, বাজারহাট সব বন্ধ রয়েছে। উত্তেজনা থাকায় মঙ্গলবার থেকেই এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। ১০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে ৪০ জনকে।
স্থানীয় কৃষকদের আশঙ্কা, এই কারখানা হলে জলস্তর কমে যাবে। তাছাড়া বায়ু এবং জল দূষণেরও সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয়দের সেই আপত্তিকে উপেক্ষা করে রথিখেড়া গ্রামে ৪০ মেগাওয়াটের কারখানার নির্মাণ শুরু করেছে চণ্ডীগড়ের সংস্থা দুন ইথানল প্রাইভেট লিমিটেড। এরপরই মহাপঞ্চায়েতের ডাক দেন কৃষকরা। তাঁদের একটাই দাবি, নতুন করে পরিবেশগত ছাড়পত্র নিতে হবে। স্থানীয়দের অনুমতি না নিয়ে কারখানার নির্মাণ করা যাবে না। এই অবস্থায় এদিন মহাপঞ্চায়েতের ডাক দেন কৃষকরা। গত কয়েকদিন ধরে গ্রামে গ্রামে মহাপঞ্চায়েতে হাজিরার জন্য প্রচারও হয়েছে দেদার। পরিস্থিতি সামাল দিতে হনুমানগড় জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। তাছাড়া অপ্রয়োজনীয় জমায়েত এবং মিছিল আটকাতেও ১৪৩ ধারা জারি করা হয়। প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে এদিন সকাল থেকে রথিখেড়ায় হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন। অনেকে কারখানার প্রাচীরও ভেঙে দেন। এই অবস্থায় পুলিশ লাঠি চালাতে থাকে। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
হনুমানগড়ের জেলাশাসক কৌশল যাদব জানিয়েছেন, ২০২২ সালে ‘রাইজিং রাজস্থান’ শিল্প সম্মেলনে এই কারখানা গড়া নিয়ে চুক্তি হয়। সমস্ত ছাড়পত্র কারখানার রয়েছে। এদিনের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে সমাজবিরোধীরা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কারখানার দিকে মিছিল করে। আইন হাতে তুলে নেওয়ায় বাধ্য হয়ে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে।’ দুন ইথানল প্রাইভেট লিমিটেড জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার যে ইথানল ব্লেন্ডেড পেট্রল (ইবিপি) তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে, সেই লক্ষ্যেই এই কারখানা নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে পুরো পরিস্থিতির জন্য প্রশাসনকেই দুষেছে ‘ফ্যাক্টরি রিম্যুভাল স্ট্রাগল কমিটি’। সংগঠনের নেতা রভজ্যোত সিং বলেন, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৭০ জন জখম হয়েছেন। শতাধিক কৃষক স্থানীয় গুরুদ্বারে আশ্রয় নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার আরও কৃষক বিক্ষোভে শামিল হবেন। কংগ্রেস নেত্রী সবনম গোদারার দাবি, প্রশাসনের পক্ষ থেকে কারখানার নির্মাণ বন্ধ রাখার লিখিত প্রতিশ্রুতি না পেয়েই বিক্ষোভ হিংসাত্মক আকার নিয়েছে।