• মোদি জমানায় ক্রমশ কমেছে মালগাড়ির গড় গতিবেগ, অবিলম্বে পদক্ষেপের সুপারিশ সংসদীয় স্থায়ী কমিটির
    বর্তমান | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: দীর্ঘদিন ধরেই পণ্যবাহী ট্রেনের ঘণ্টায় গড় গতিবৃদ্ধি নিয়ে একাধিক গালভরা ঘোষণা করেছে মোদি সরকার। কিন্তু বাস্তবে যে রেলমন্ত্রক সেই তিমিরেই পড়ে, তা আরও একবার স্পষ্ট হল। গত মঙ্গলবার পণ্যবাহী ট্রেন সংক্রান্ত বিষয়ে সংসদে রিপোর্ট পেশ করেছে রেল সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। বিজেপি সাংসদ সি এম রমেশের নেতৃত্বাধীন সংশ্লিষ্ট কমিটির সেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, কেন্দ্রের দ্বিতীয় মোদি জমানায় মালগাড়ির ঘণ্টায় গড় গতির পরিমাণ ক্রমশ কমেছে। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টিকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রেল বিশেষজ্ঞ মহল।

    রেল সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি যে রিপোর্ট পেশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ২০২০-২১ আর্থিক বছরে ঘণ্টায় মালগাড়ির গড় গতি ছিল ৪৩.২ কিলোমিটার। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ঘণ্টায় ২৩.২ কিলোমিটারে। সংসদীয় কমিটির রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ২০২১-২২ আর্থিক বছরে এই গড় গতির পরিমাণ ছিল ঘণ্টায় ৩৭.৮ কিলোমিটার। ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে ঘণ্টায় ৩০.৮ কিলোমিটার। ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে প্রতি ঘণ্টায় পণ্যবাহী ট্রেনের গড় গতির পরিমাণ ছিল ২৫ কিলোমিটার। এই ব্যাপারে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য রেল বোর্ডকে সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। 

    রিপোর্টে যদিও এই বিষয়ে রেলমন্ত্রকের জবাবও উল্লেখ করেছে সংসদীয় কমিটি। মন্ত্রক সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছে, একই রেল লাইনে যাত্রীবাহী ট্রেনও চলছে বলে মালগাড়ির গড় গতি ঘণ্টায় বাড়ানো যাচ্ছে না। শুধুমাত্র মালগাড়ির চলাচলের জন্যই ইস্টার্ন এবং ওয়েস্টার্ন পণ্যবাহী ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরের কাজে হাত দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যেসব রেলওয়ে শাখা এবং রুটে অত্যধিক বেশি পরিমাণে ট্রেন চলাচল করে, সেইসব হাই-ডেনসিটি নেটওয়ার্কে মাল্টি-ট্র্যাকিং, ডাবলিংয়ের মতো প্রকল্পে হাত দেওয়া হয়েছে। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লোকোমোটিভের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। এমনকি তুলনায় অনেক বেশি গতিতে ছুটতে পারে, এমন হাই-স্পিড ওয়াগনেরও ব্যবস্থা হচ্ছে। এই ব্যাপারে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সুপারিশ করেছে, প্রয়োজনে রেল লাইনের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হোক। সিগন্যালিং ব্যবস্থাতেও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হোক। এরই পাশাপাশি যেসব রুটে ট্রেনের গতি অত্যন্ত কম, সেই রুটগুলিকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হোক। পণ্যবাহী ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরের অগ্রগতি নিয়ে কমিটি তার রিপোর্টে সন্তোষ প্রকাশ করেছে ঠিকই। তবে এক্ষেত্রে একইসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে ইস্টার্ন ডিএফসির আওতায় সোননগর-ডানকুনি অংশের প্রসঙ্গও। রেল সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি তার রিপোর্টে উল্লেখ করেছে, প্রাথমিকভাবে এটি পিপিপি (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) মডেলে বাস্তবায়িত হবে বলে স্থির হয়েছিল। কিন্তু এই বিষয়ে কোনও বেসরকারি সংস্থাই উৎসাহ দেখায়নি। ফলে এক্ষেত্রে পিপিপি মডেলে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত রেলকে বাতিল করতে হয়েছে। -ফাইল চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)