• ৪৪ বছরের পুরনো নথিবিহীন গাড়ি অবাধে চলছে শিলিগুড়ির রাস্তায়
    বর্তমান | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: সালটা ১৯৮১। কালিম্পং পরিবহণ দপ্তরে রেজিস্ট্রেশন হয় একটি লরির। ২০১৬’তে রেজিস্ট্রেশন ও ফিটনেস শেষ হয়ে যায়। কালিম্পং জেলা থেকে শিলিগুড়ির আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তরে সেই গাড়ির এনওসির জন্য আবেদন জানানো হলেও তা দেওয়া হয়নি। কিন্তু তারপরেও বহাল তবিয়তে শিলিগুড়ি শহরের গলিপথ থেকে শুরু করে মূল রাস্তায় চলছে সেই লরি। শুধুমাত্র একটি গাড়ি নয়, এমন পুরনো নথিহীন লরি নদী থেকে বালি তুলে দাপাচ্ছে শহরে। 

    পুলিশের চোখে ধুলো দিতে বেশিরভাগ সময়ে গভীর রাতে এসব লরি রাস্তায় নামছে। ভোরের আলোর আগেই গাড়ি ঢুকে যাচ্ছে গ্যারেজে। পুরনো নথিহীন গাড়ি চললেও কেন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ কিংবা পরিবহণ দপ্তর? আর এই প্রশ্নের উত্তরে দুই দপ্তর একে অপরের দিকে দায় ঠেলছে। যুক্তি খাঁড়া করে পরিবহণ দপ্তর জানিয়েছে, এমভিআই কম। তাই ধারাবাহিক অভিযান হচ্ছে না। পুলিশের ট্রাফিক বিভাগকে উদ্যোগী হতে হবে। দায় ঝেরে ফেলে পুলিশের পাল্টা দাবি, পরিবহণ দপ্তর জানালে নিশ্চই ফোর্স দেওয়া হবে। কিন্তু তারা অভিযানে যাওয়ার ব্যাপারে আবেদনই করেনি। 

    এ বিষয়ে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসিপি (ট্রাফিক) কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা আমাদের মতো করে ধারাবাহিক অভিযান চালাই। কিন্তু আমাদের মনে পড়ে না পরিবহণ দপ্তর এই বিষয়টি নিয়ে কখনও আমাদের কাছে অভিযান চালানোর জন্য আবেদন বা দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। আমরা এবার উদ্যোগী হব। 

    অন্যদিকে, শিলিগুড়ির আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, মোটর ভেহিকেল ইনস্পেকটর পর্যাপ্ত নেই। যাঁরা আছেন তাঁরা মূলত শহরের মূল রাস্তায় অভিযান চালিয়ে থাকেন। তবে এই বিষয়ে পুলিশ বাড়তি উদ্যোগী হলে আরও বেশি করে এই ধরনের গাড়ি ধরা সম্ভব হবে। 

    তবে পুলিশ ও পরিবহণ দপ্তরের এই টানাপোড়েন চললেও শহরজুড়ে যে ফিটনেসহীন পুরনো গাড়ি, লরি চলাচল করছে তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন দুই দপ্তরের আধিকারিকরা। দিনে হোক কিংবা রাতে বেআইনিভাবে এমন গাড়ি চলাচল করলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেক্ষেত্রে জখম কিংবা মৃত ব্যক্তি গাড়ির বিমা না থাকায় আর্থিক কোনও ক্ষতিপূরণ পাবেন না। 

    পুলিশের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, নদী থেকে বেআইনিভাবে গাড়িতে বালি, পাথর তোলার জন্য এই ধরনের লরি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কেন এই সকল গাড়ি শহরে ঢোকার সময়ে ট্রাফিক পুলিশ বা এমভিআইরা দেখছেন না, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।  
  • Link to this news (বর্তমান)