নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বকেয়া বেতন, বোনাস মেটানো সহ ছ’দফা দাবি নিয়ে বুধবার বাঁকুড়ায় বিক্ষোভ দেখালেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের (পিএইচই) পাম্প ও ভাল্ব অপারেটররা। এদিন পিএইচই-র বাঁকুড়া ডিভিশনের অফিসে ওই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। অবিলম্বে দাবি না মিটলে আগামী দিনে জল সরবরাহ বন্ধ রেখে লাগাতার আন্দোলন চলবে বলে কর্মীরা হুমকি দিয়েছেন। তারফলে জেলাজুড়ে পানীয় জল সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের বাঁকুড়া ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার পৃথ্বীশ ভট্টাচার্য বলেন, এদিন পাম্প ও ভাল্ব অপারেটররা দাবিদাওয়া পেশ করেছেন। এর আগেও যেমন অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, সেইমতো আমরা কর্মীদের বকেয়া মিটিয়েছি। দ্রুত বকেয়া মেটানো নিয়ে আমরা ঠিকাদারদের সঙ্গে আলোচনা করছি।
সোনামুখীর পাম্প অপারেটর ধনঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা ঠিকাকর্মী হিসেবে জেলাজুড়ে সরবরাহের কাজ করি। শহর ও গ্রামাঞ্চলে সুষ্ঠুভাবে পরিষেবা দেওয়ার পিছনে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। জল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার কারণে আমাদের তালাবন্ধ করে রাখার মতো অপ্রীতিকর ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। তখন স্থানীয় পঞ্চায়েত, পুরসভাকে জানালেও অনেক সময় সাড়া পাওয়া যায়নি। এই পরিস্থিতিতে অনিয়মিত পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আমাদের বকেয়া মেটানো না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হতে পারে।
অপর এক আন্দোলনকারী শম্ভুনাথ নন্দী বলেন, বাঁকুড়া জেলায় প্রায় ১৭০০ কর্মী রয়েছেন। আমার গত চারমাস বেতন পাচ্ছি না। আমাদের মধ্যে অনেকে পুজোর বোনাস পাননি। এভাবে আমাদের বঞ্চিত করা যাবে না। বকেয়া মেটানোর পাশাপাশি বৈধ পরিচয়পত্র দেওয়ার দাবিও আমরা আধিকারিকদের কাছে জানিয়েছি। কারণ অনেক সময় পাম্পে জল তুলতে রাত হয়ে যায়। অনেকে মাঝরাতে বাড়ি ফেরেন। তখন পুলিশি ঝামেলার মধ্যে আমাদের পড়তে হয়। নানা কৈফিয়ত দিতে হয়। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা না হলেও আগামী দিনে বিশেষ করে ভোটের সময় তা করা হতে পারে বলে আমাদের আশঙ্কা। দাবি না মিটলে আগামী দিনে কাজ বন্ধ রেখে পিএইচই-র অফিসে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। তখন পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ রাখতে আমরা বাধ্য হব।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলাজুড়ে শতাধিক প্রকল্পের আওতায় বাসিন্দারা জল পেয়ে থাকেন। রিজার্ভার, ওভারহেড ট্যাঙ্ক থেকে নলবাহিত পানীয় জল বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যায়। পাইপ লাইনের মাঝে মাঝে ভাল্ব থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রকল্প এলাকায় ভূগর্ভস্থ জল উত্তোলনের জন্য পাম্প বসানো হয়েছে। সেসব চালানোর জন্য অপারেটরের প্রয়োজন পড়ে। ফলে দু’হাজারের কাছাকাছি অপারেটর বসে গেলে রুখাশুখা বাঁকুড়ার বাসিন্দারা সমস্যায় পড়বেন বলে ওয়াকিবহাল মহলের আশঙ্কা।