• ডিজিটাল অ্যারেস্ট হতে পারেন বিধায়ক ও সাংসদরা, অপরিচিত ভিডিওকল ধরতে মানা পুলিশের
    বর্তমান | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ‘ডিজিট্যাল অ্যারেস্ট’ হতে পারেন বিধায়ক ও সাংসদরা। তাঁদের প্রতারণার জালে জড়াতে পারে প্রতারকরা। এমনই ‘ইনপুট’ পেয়েছে পুলিশ। তারপরেই হেভিওয়েট এই জনপ্রতিনিধিদের পুলিশ সতর্ক করছে। অপরিচিত কারও ভিডিও কল না ধরার পরমার্শ দেওয়া হয়েছে। কয়েক দিন আগে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষদের সাইবার প্রতারকরা ডিজিটাল অ্যারেস্ট করে। উপস্থিত বুদ্ধির জোরে তাঁদের টাকা খোয়াতে হয়নি ঠিকই, কিন্তু অধিকাংশ জনপ্রতিনিধির পালস রেট বেড়ে গিয়েছিল। জেলা পরিষদের সভাধিপতিকেও ডিজিটাল অ্যারেস্ট করার চেষ্টা করেছিল তারা। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, বিধায়ক-সাংসদদের নম্বর ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। সেখান থেকে নম্বর নিয়ে তারা জনপ্রতিনিধিদের ডিজিটাল অ্যারেস্ট করার পরিকল্পনা নিয়েছে। তাই জনপ্রতিনিধিদের ফোন করে সতর্ক করা হচ্ছে। 

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন আগে পূর্ব বর্ধমান জেলার এক বিধায়ক সেক্সটরশনের শিকার হয়েছিলেন। তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ করার পরই পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তবে, শুধু পূর্ব বর্ধমান নয়, রাজ্যের বিভিন্ন জেলার এমএলএ, এমপিদের কাছেও ‘ডিজিটাল অফিসার’ পরিচয় দিয়ে ফোন আসতে পারে। আর এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, সাইবার অপরাধীদের কথা বলার ধরণ সম্পূর্ণ অন্যরকম। একজন তদন্তকারী অফিসার যেভাবে কথা বলেন, সেটা তারাও সেভাবেই বলে। তারা প্রথমে গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিক পরিচয় দিয়ে ফোন করে। কখনও বলে, আপনার নামে আসা একটি পার্সেল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেই পার্সেলে হেরোইন বা ব্রাউন সুগার রয়েছে। আপনার সঙ্গে মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ কথা বলবে। এরপরই তারা ভিডিও কলে অন্য আর এক প্রতারককে নেয়। সে পুলিশের পোশাক পরে থাকে। নকল থানায় বসে সে কথা বলে। থানায় বসে থাকা ওই ভুয়ো অফিসার বিভিন্ন কৌশলে আধার, প্যানকার্ড চেয়ে নেয়। তারপরই জানায় এই কেস থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য টাকা দিতে হবে। এই টাকার অঙ্ক কখনও ১ কোটি, আবার কখনও ৫ কোটি। কখনও কখনও আবার টাকার অঙ্ক ১০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। তবে, সব সময় তারা পার্সেল বাজেয়াপ্ত করার নামে ফোন করে এমনটা নয়, অনেক সময় অন্য কোনও কারণ দেখিয়েও তারা ফোন করে ভয় দেখাতে শুরু করে। 

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেক শিক্ষিত এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিও প্রতারিত হয়েছেন। জনপ্রতিনিধিরাও তাদের ফাঁদে জড়িয়ে যেতে পারেন। অনেকে প্রতারিত হওয়ার পরও পুলিশে অভিযোগ জানাতে লজ্জা পান। জনপ্রতিনিধিদের কাছে এধরনের ফোন এলে, তাঁরা পুলিশকে জানাতে যাতে দ্বিধাবোধ না করে, সেই পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল অ্যারেস্ট বলে কিছু হয় না। এজাতীয় প্রচার পুলিশ সহ বিভিন্ন সংস্থা বহু দিন ধরেই করে আসছে। তারপরও অনেকেই তাদের জালে বারেবারেই জড়িয়ে যাচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)