• চারজন নয়, আদিবাসী নাবালিকার ধর্ষণকারী একজনই, দাবি পুলিশের
    বর্তমান | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: চারজন নয়, একজন যুবকই আদিবাসী নাবালিকাকে ধর্ষণ করেছে। মল্লারপুর গণধর্ষণকাণ্ডের তদন্তে এমনই তথ্য উঠে এসেছে বলে পুলিশের দাবি। এদিকে আজ বৃহস্পতিবার রামপুরহাট আদালতে নাবালিকার গোপন জবানবন্দি নেওয়া হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, একজন যুবকই ওই নাবলিকার উপর অত্যাচার চালিয়েছে। বাকি পাঁচজন ওখানে উপস্থিত ছিল। আইন অনুযায়ী, ধৃত ছ’ জনই একই ধারায় অভিযুক্ত। এদিকে আদিবাসী মহিলাদের উপর একের পর এক ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে বড়সড় আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে আদিবাসী সংগঠন। 

    আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতরা হল বনমালি ঘোষ, সমাপ্ত কোনাই, সুজিত ঘোষ, অরিন্দম সরেন, অভিজিৎ ঘোষ ও শুভজিৎ ঘোষ। তাদের বিরুদ্ধে বিএনএসের ১২৬ (২)৭৪/৭০(২), পকসো আইনের ৪/৬/৮ ও এসসি এসটি আইনের ৩(১)(W)/৩(১)(V) ধারায় মামলা শুরু হয়েছে। বর্তমানে অভিযুক্তরা পুলিশ হেপাজতে রয়েছে। আগামী সোমবার তাদের আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ রয়েছে। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবারই রামপুরহাট মেডিকেলে নাবালিকার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর পর তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এদিন দুপুরে তদন্তের স্বার্থে নাবালিকার বাড়িতে আসে পুলিশ। তারা পরিবারের পাশাপাশি নির্যাতিতা নাবালিকার সঙ্গেও কথা বলেন।  দুপুরে স্থানীয় কয়েকজন আদিবাসী থানায় এসে ঘটনার তদন্তকারী অফিসার রামপুরহাট এসডিপিও গোবিন্দ শিকদারের সঙ্গে দেখা করেন। যেহেতু ওই নাবালিকা বাংলা বলতে পারে না, তাই আদালতে সরকারিভাবে একজন ইন্টারপ্রেটার দেওয়ার দাবি জানানো হয়। যদিও এই নিয়ে পুলিশ কিছু বলতে চায়নি। 

    এদিকে ঘটনার পর থেকে এলাকাজুড়ে থমথমে পরিবেশ। সন্ধ্যা হলেই কার্যত ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে রাস্তা। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, জঙ্গলের ভিতর দিয়ে রাস্তা হওয়ায় সন্ধ্যার পর থেকে পুলিশের গাড়ি টহল দেয়। সোমবার রাতে পুলিশের গাড়ি ছিল বলেই ঘটনার এক ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্ত ছ’ জনকে‌ই ধরা সম্ভব হয়েছে। 

    এদিকে নির্যাতিতার মা অভিযোগে জানিয়েছেন, সোমবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ মল্লারপুরের বাগানপাড়ায় মেলা দেখে এক আত্মীয়ের বাইকে করে বাড়ি ফিরছিল নাবালিকা। মল্লারপুরের শিবপুর গ্রামের জঙ্গলের রাস্তায় তাঁদের বাইক আটকায় টোটোয় চড়ে আসা ছয় যুবক। অভিজিৎ এবং শুভজিৎ আত্মীয়কে চেপে ধরে রাখে। বাকিরা মেয়েকে ধর্ষণ করে। যদিও তদন্তে নেমে পুলিশের দাবি, একজন যুবক ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করেছে। বাকিরা সেখানে ছিল। আইনানুযায়ী বাকিরাও সমান দোষী। তবে কে ধর্ষণ করেছে, তা এখনই জানাতে নারাজ পুলিশ। এদিকে সিধো কানহো হুল কমিটির সদস্যরা এদিন নির্যাতিতার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। কমিটির কনভেনর সোম টুডু বলেন, কিছুদিন আগেই আমাদের এক বোনকে ধর্ষণ করে টুকরো টুকরো করে কেটে খুন করল তারই স্কুলের শিক্ষক মনোজ পাল। 

    এবার গণধর্ষণের শিকার হল আরেক বোন। একের পর এক এই ধরনের ঘটনার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে খুব শীঘ্রই কয়েক হাজার আদিবাসী মিলে বিক্ষোভ মিছিল করব। তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। সেইসঙ্গে পরিবারকে বলা হয়েছে, কোনও কিছুর বিনিময়ে যেন সমঝোতা না করা হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)