এসআইআর শুনানির আগেই দলকে সাংগঠনিক পরিসরে আরও শক্তিশালী করতে তৎপর মমতা
বর্তমান | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: খসড়া ভোটার তালিকায় বাদ যাওয়া নামের তালিকা আরও খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ। আর শুনানি পর্বে এলাকার মানুষের পাশে থাকা। মূলত এই দুটি বিষয়ের উপর নজর দিয়ে এসআইআর প্রক্রিয়ায় শুনানি শুরুর আগেই দলীয় সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে চলেছে তৃণমূল। একদিকে যেমন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুথ লেভেল এজেন্টদের নিয়ে বৈঠক করবেন। অন্যদিকে তেমনই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা ভিত্তিক সব তথ্য নেওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
আগামী ২৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে এসআইআর প্রক্রিয়ায় শুনানি পর্ব। এই পর্বে যাঁদের নির্বাচন কমিশন ডাকবে, তাঁদের সব নথিপত্র নিয়ে হাজির হতে হবে। শুনানি পর্ব শুরু হওয়ার আগে একটি সাংগঠনিক বৈঠক সেরে নিচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে একটি দলীয় বৈঠক করবেন তিনি। কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী জেলার বিধানসভাগুলিতে তৃণমূলের বুথ লেভেল এজেন্টদের বৈঠকে ডেকেছেন মমতা। আগামী দিনে কী করণীয়, সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট বার্তা দেবেন তিনি। ঘটনাচক্রে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার ভবানীপুর বিধানসভার তৃণমূলের বুথ লেভেল এজেন্টদের নিয়ে একপ্রস্থ বৈঠক সেরে ফেলেছেন তিনি। ফলে আগামী সোমবার মমতার বার্তা ও নির্দেশ তৃণমূলের সাংগঠনিক পরিসরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। ভবানীপুরে যেমন মমতা স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, বাদ যাওয়া নামের তালিকা খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে। তারপর এবার তৃণমূল বিধায়করাও নিজের নিজের এলাকায় নেমে পড়েছেন খসড়া ভোটার তালিকা স্ক্রুটিনির কাজে। বাদ পড়া নামের তালিকা এবং খসড়া তালিকায় কোথাও, কোনও অসংগতি রয়েছে কি না, সেটা খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণের কাজে নেমে পড়েছেন বিধায়করা। যেখানে তৃণমূলের বিধায়ক নেই, সেখানে দলীয় পদাধিকারীরা নজরদারি করছেন। কোনও অসংগতি ধরা পড়লে দলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে জানানোর কথা বলা হয়েছে।
বুধবার দিল্লি থেকে ফিরে কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা দেখতে পেয়েছি ডানকুনিতে ‘জীবিত’ এক তৃণমূল কাউন্সিলারকে ‘মৃত’ হিসেবে দেখিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আমরা সবদিকেই নজর রাখছি। কোনও এলাকায়, বিশেষ করে, শহরে কোনও যোগ্য ভোটারের নাম বাদ গিয়ে থাকলে আমরা অভিযোগ জানাব। কমিশনকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি হাজার চেষ্টা করেও কোনও যোগ্য ব্যক্তির নাম বাদ দিতে পারবে না। শুনানি পর্ব শেষ হয়ে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হতে এখনও অনেকটা সময় রয়েছে। এইসময় কোনও ধরনের চক্রান্ত আমরা বরদাস্ত করব না। পাশাপাশি অভিষেকের সংযোজন, এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হতেই বিজেপি দাবি করেছিল এক কোটি বাংলাদেশি, রোহিঙ্গা, অনুপ্রবেশকারী রয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের তথ্যে বিজেপির দাবি খারিজ হয়ে গিয়েছে। ওদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে, মুখ থুবড়ে পড়েছে ওরা। এখন বিজেপি নেতাদের উচিত, বাংলাকে খাটো ও বদনাম করার জন্য কান ধরে ওঠবস করা।
এদিকে তৃণমূলের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের ভোটর সার্ভিস পোর্টালে ‘স্টেট’ অর্থাৎ রাজ্যকে অনুবাদ করা হয়েছে ‘অবস্থা’ হিসেবে। বাংলা ভাষায় অবস্থা বলতে বোঝায় পরিস্থিতি। কিন্তু একটি ‘রাজ্যকে’ কখনও ‘অবস্থা’ বলা যায় না। এটি কমিশন মোটেই ঠিক কাজ করেনি।