রেলের পরিদর্শক ইঞ্জিনের ধাক্কায় মৃত্যু ৩ মহিষের, দীর্ঘক্ষণ ট্রেন বন্ধ, কাটোয়া-ব্যান্ডেল শাখায় শীতের রাতে দুর্ভোগ যাত্রীদের
বর্তমান | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: রেলের পরিদর্শক ইঞ্জিনের ধাক্কায় কাটা পড়ল তিন-তিনটি মহিষ। তার জেরে প্রায় চার ঘণ্টা বন্ধ থাকল ব্যান্ডেল কাটোয়া রেল যোগাযোগ। মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনার জেরে তীব্র হেনস্তা হয় নিত্যযাত্রীদের। অভিযোগ, পরিদর্শক ইঞ্জিনের চালক গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারাতেই সমস্যা হয়েছিল। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ওই ঘটনা ঘটে ব্যান্ডেল স্টেশনের কিছু আগে ঈশ্বরবাহা গ্রামে। সাম্প্রতিক সময়ে নানা কারণে বারবার যাত্রী হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে রেলের বিরুদ্ধে। হুগলি-হাওড়ার ‘লাইফলাইন’ বলা হয় রেলপথকে। যাত্রীদের অভিযোগ, ওই লাইফলাইনকে কার্যত পঙ্গু করে দিচ্ছেন রেলকর্তারা।
মঙ্গলবার রাতে ওই পরিদর্শক ইঞ্জিনটি কাটোয়া থেকে ব্যান্ডেলের দিকে আসছিল। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ সেটি সপ্তগ্রামে পৌঁছয়। ব্যান্ডেল স্টেশনে ঢোকার কিছু আগে সপ্তগ্রামের ঈশ্বরবাহা এলাকায় আচমকা রেললাইনের উপরে মহিষের দল উঠে আসে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেনটি গতি কমাতে না পেরে মহিষগুলির উপর দিয়েই চলে যায়। তাতে তিনটে মহিষ ট্রেনের চাকায় কাটা পড়ে। আরও চারটি মহিষ ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকে গিয়ে জখম হয়। এরপরেই কোনওরকমে চালক ইঞ্জিনটিকে থামাতে সক্ষম হন। কিন্তু ট্রেনের চাকার সঙ্গে মৃত মহিষগুলির শরীর আটকে যাওয়ায় ট্রেন চালানো যায়নি।
খবর পেয়ে ব্যান্ডেল সহ বিভিন্ন স্টেশন থেকে রেলকর্মী ও আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে আসেন। কিন্তু নানাভাবে চেষ্টা করেও ইঞ্জিনটিকে সচল করা যায়নি। ফলে কাটোয়া-ব্যান্ডেল ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। রাত প্রায় ১০টা নাগাদ মহিষগুলিকে কেটে বের করার কাজ শুরু হয়। তিনটি মহিষের দেহ সরাতে বহু সময় লেগে যায়। শেষ পর্যন্ত রাত ১২টা নাগাদ ওই পথে রেল যোগাযোগ পুনরায় চালু হয়। প্রায় চার ঘণ্টা রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকায় নিত্যযাত্রীরা শীতের রাতে বিপুল হেনস্তার মুখে পড়েন। এনিয়ে যাত্রী মহলে তীব্র ক্ষোভও দেখা দেয়। যদিও ব্যান্ডেল স্টেশনের এক কর্তার দাবি, দ্রুত রেল যোগাযোগ সচল করা হয়েছিল। ঈশ্বরবাহার বাসিন্দা আমজাদ আলি রাতেই দুর্ঘটনাস্থলে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ওই রেলপথে গোরু, মহিষ চলাচল করে। কিন্তু কখনও দুর্ঘটনা হয়নি। একে রাত, তার উপরে পরিদর্শক ইঞ্জিন ওই রেলপথে চলছিল। সেই কারণেই সমস্যা হয়েছে। তাতে নিত্যযাত্রীদের ভোগান্তিও হয়েছে।